পুস্তক পরিচয় - মরণকূপ

 





=====================
পুস্তক পরিচয় 
=====================
#রিভিউ
#review

#পাঠপ্রতিক্রিয়া
©সমীরণ
==================================
   মরণকূপ
==================================

লেখক – শুদ্ধেন্দু চক্রবর্তী
প্রকাশক – অভিযান পাবলিশার্স

==================================

অনেকদিন ধরেই বইটা লক্ষ্য রেখেছিলাম, ফাইনালি শেষ করলাম।

‘ইতিহাস’ এমন একটা বিষয়, স্কুলজীবনে যেটাকে আমি একেবারে অপছন্দ করতাম। উচ্চমাধ্যমিকে, সত্যি বলতে সায়েন্স নিয়ে পড়াশুনা করার একটা বিশেষ কারন হোল, ইতিহাস ভূগোল থেকে মুক্তি পাওয়া। কিন্তু সময়ের নিরিখে আজ আমি যেখানে দাড়িয়ে, সেখানে ইতিহাস ছাড়া একটা শব্দ লিখতে পারি না। আজ অবশ্য ইতিহাস নিয়ে সেই ভয়টা একেবারেই নেই।

‘ মরণকূপ ‘ একটি ঐতিহাসিক নির্ভর ক্রাইম থ্রিলার।
ভারতের নাট্যশাস্ত্র থেকে শুরু করে ভারতনাট্যম এর উৎপত্তি কথা, এই থিমের ওপরে লেখা।
কাহিনীতে একের পর এক শিল্পী তথা নাট্যশিল্পী অথবা নর্তকী অথবা এমন কেউ, যার মধ্যে শিল্পসত্ত্বা উপস্থিত, মারা যাচ্ছেন। অথবা বলা ভালো খুন হচ্ছেন। কে, কেন, কীভাবে এবং শেষমেশ খুনি আদেও ধরা পড়বে কিনা, এই হল কিসসা।
কাহিনীর মোট আঠাশটি চ্যাপ্টার। মজার বিষয়, প্রতিটি চ্যাপ্টার এর নাম ভারতনাট্যম এর একটা মুদ্রার নামকরনে নামাঙ্কিত। এবং অবশ্যই সেই উল্লিখিত মুদ্রার যোগ চ্যাপ্টারের সাথে রয়েছে।
লেখক নিজের বিষয়ে অগাধ জ্ঞান রাখেন, সেটা আলাদা করে বলার দরকার পড়ে না। প্রতিটি চ্যাপ্টারে, প্রায় প্রতিটি প্যারায় রয়েছে তথ্য। একটা কমপ্যাক্ট রিসার্চ এর স্টোরি লাইন বলা চলে। পড়তে গিয়ে মাঝে মধ্যে একটু থমকে যেতে হচ্ছে, হয়তো আবারও সেই জায়গাটি দ্বিতীয়বার করে অনুভব করতে পড়তে হচ্ছে। ভালো লাগছিলো ব্যাপারগুলো, পুরো মাত্রায় গল্প কে গিলে খাওয়া যাকে বলে।
   

লেখক নিজের জ্ঞানের সাথে সাহিত্যের ভারসাম্য রেখেছেন ঠিকই কিন্তু আবেগ কে বেশী জায়গা দিতে পারেননি। একটা লেখার সাথে নিজেকে না জড়িয়ে নিতে পারলে যেটা হয়, এক্ষেত্রে তাই হয়েছে। আমি গল্পের প্রতি আবেগতাড়িত হতে পারিনি। তবে এটা অস্বীকার করবো না, গল্পের কৌতূহল অবশ্যই আমাকে পুশ করেছে, গল্পের শেষ অংশে যাওয়ার জন্য
এটুকু বুঝতেই পেরেছিলাম ক্লাইম্যাক্সে সেই রকম জোরালো কোন মোচড় থাকবে না, কারন আসল ব্যাপারটা মোটামুটি ততক্ষণে জানা হয়ে গিয়েছে, এখন শুধুমাত্র ধরা পড়ার পালা।
ইংল্যান্ড থেকে কোলকাতা থেকে মেদিনীপুর থেকে কলেজস্ট্রীট থেকে ভুবনেশ্বর থেকে লক্ষৌ সবই রয়েছে, তবে হাওয়ার গতিতে। বোঝার আগেই স্থানান্তর হয়ে যাচ্ছে।
বেশকিছু ভাইটাল পয়েন্ট, স্থান ইত্যাদির উল্লেখ রয়েছে। সেগুলো প্রচণ্ড মাপের ব্যাখা দরকার আলাদা ভাবে। সেগুলোর ওপর ফোকাস করলে আরই ভালো হতো। ১১৫ পেজটি হয়তো আরও ২০ পেজ বাড়ত, কিন্তু তাতে ক্ষতি ছিল না, বরং পাঠ আরই উপভোগ্য হতো।


=================================

  স্কোরবোর্ড – ৩.৫ / ৫
#সমীরণসামন্ত

#রিভিউ
#পাঠপ্রতিক্রিয়া
©বাতাসবাবুরপাতা
©সমীরণসামন্ত

 

Comments