পুস্তক পরিচয় - কালো মনের গল্প

 




=====================

পুস্তক পরিচয় 

=====================

#রিভিউ

#review

#পাঠপ্রতিক্রিয়া

©সমীরণ

==================================

    কালো মনের গল্প  

==================================

লেখক – পথিক মিত্র

প্রকাশক – লেখনী প্রকাশনী

মুদ্রিত মুল্য – ২২৫ টাকা

================================== 


মন ভালো নেই বা মন খারাপ, এমন শব্দ বরাবরই আমরা শুনেছি। কিন্তু এই বইতে ‘ভালো’ শব্দের ‘ভা’ কেটে ‘কা’ করলো কেন ? মন আবার কালো হয় নাকি ? 


আমি যদি বলি, শুধু কালো নয়, কালোর থেকেও অন্ধকার বলে যদি কিছু থাকে যাকে কোন ভাবেই উপলব্ধি করা যায় না ঠিক ততক্ষণ পর্যন্ত, যতক্ষণ না কোন দুর্ঘটনা ঘটছে, তাহলে ?

যদি বলি প্রতিটা মানুষের মনের গহ্বরে একটা কালো মন থাকে। অথবা বলা ভালো মনের একটা ডার্ক সাইড বা নেগেটিভ জগত থাকে, যেখান থেকে শুরু হয় ক্রাইম, খুন, বীভৎসতা।


লেখক পথিক বাবুর লেখা মোট পাঁচটি গল্পের একক সংকলনের এই বইটির ছোট্ট একটা পাঠপ্রতিক্রিয়া করার চেষ্টা করছি। অবশ্যই বরাবরের মত ‘ঠোটকাঁটা’ ( লেখকের পেটেন্ট শব্দ ‘ঠোটকাঁটা’ চুরি করে মেরে দিলাম এখানেই )।

লেখক বাবুর সাথে সোশ্যাল মিডিয়াতে আলাপ, তবে সুযোগের অভাবে সামনাসামনি দেখা হয়নি এবারের বইমেলায়, আশা করছি পরবর্তী তে সেটা পূরণ হবে।


‘সাইকোলজি’ শব্দটা আমার খুব পছন্দের, তার কারন কমবেশি অনেকেই জানে। যাইহোক, সেই ঘরানার ওপর ভিত্তি করে লেখক পাঁচ রকম ফ্লেভার তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন। কম বেশী সব গল্পই বেশ উপভোগ্য। এক পলকে লেখা যাতে বোধগম্য হয়, সেই জন্য ছোট্ট ছোট্ট বাক্য ব্যবহার করা হয়েছে, যেটা আমার বেশ ভালো লেগেছে। গল্প গুলোর ব্যাকগ্রাউন্ড এবং গল্পের বুনন বেশ ভালো। প্রতিটি গল্পে কোথাও না কোথাও নতুনত্ব রয়েছে। 

প্রথম ওনার লেখা পড়লাম, মন্দ লাগলো না। পড়তে গিয়ে গল্পের ঘোর তৈরি না হলেও একটা ব্যাপার ছিল, যেটা টানটান ব্যাপারটা ধরে রাখে। এক্ষেত্রে অবশ্যই বাক্যের গঠনগত আকার অনেকাংশে ভুমিকা নেয়।



বইয়ের সেরা গল্প কোনটি ? আমার ব্যাক্তিগত ভাবে ‘তারা‘ গল্পটি সবথেকে বেশী ভালো লেগেছে। কিন্তু ভালোলাগার মধ্যেও একটা কালো ব্যাপার রয়ে গেছে। গল্পে বেশ কয়েকবার ইংরেজি লাইন ব্যবহার করা হয়েছে। গল্পের খাতিরে সেটা তৈরি হলেও, আমার বড্ড চোখে লেগেছে, বিশেষত এত বড় বড় লাইন যেখানে। গল্প পড়তে পড়তে একটা গতি তৈরি হলেও ওই ইংরেজি শব্দতে এসে সেটা আটকে যাচ্ছে। লেখক কে এই ব্যাপারটা অন্য ভাবে কম্পাইল করতে বলবো। 


‘মনে পড়ে রুবি রায় ?’ গল্পটি দারুন এবং সুন্দর তথ্য রয়েছে। বইয়ের তুরুপের তাস আপাতত এটাই মনে হোল। তবে শুরুর দিকে যে বেগ নিয়ে গল্পটি এগিয়েছিল, হঠাৎ করে সেই বেগ দ্বিগুণ গতিতে অজান্তেই বেড়ে যায়। ঘটনার একজিকিউসন যেমন লং, তেমন উপভোগ্য, কিন্তু পুরো ব্যাপারটার গতিটা একটু বেশী বলেই মনে হোল। পাঠকের বোঝার আগেই ফাস্ট ট্রেন এর মত বেড়িয়ে যাচ্ছে, নিজের গতিতে, কাউকে তোয়াক্কা না করে। 

‘ কিউট ‘ শব্দটা যে যে ক্যারেক্টার সেখানে ব্যবহার করেছে, পরিস্থিতি অনুযায়ী একেবারে মানায়নি বলেই আমার ধারনা, বেশ কানে লাগছিলো পড়তে গিয়ে। এটা অবশ্যই রিলেটিভ ব্যাপার, গল্পের ফ্রেমটা হয়তো অন্যদিকে ধরলেই ঠিক হয়ে যেত। আর সেই ব্যাপারটাই ‘তারা‘ তে লেখক বলে গেছেন।


বইয়ের বাইন্ডিং, পেজের কোয়ালিটি অবশ্যই ভালো এবং কনটেন্ট অনুযায়ী দামটাও যথার্থ। 

একটা কথা যেটা কখনই বলিনি, আজ বলে ফেলছি। সেটা হোল, একসাথে কখনও সুযোগ পেলে, কাজ করার ইচ্ছে রইলো কারন কালো মন ছাড়া গল্প জমে না...

 

=================================

   স্কোরবোর্ড – ৩.৭ / ৫

#সমীরণসামন্ত

#রিভিউ

#পাঠপ্রতিক্রিয়া

©বাতাসবাবুরপাতা

©সমীরণসামন্ত


Comments