🆁🅴🆅🅸🅴🆆 - Mangalavaaram ( ২০২৩ )

 

🆁🅴🆅🅸🅴🆆
=======================
Mangalavaaram ( ২০২৩ )
=======================

প্লট – ক্রাইম, থ্রিলার
ভাষা – তেলেগু
আই এম ডি বি – ৬.৯ / ১০
নিজস্ব রেটিং – ৮ / ১০

=======================
সাবটাইটেল – ইংরেজি
=======================

যার কেউই নেই , তার ভগবান আছে। যার ভগবানও নেই, তার বন্ধু আছে। ভগবান যখন নিজে না যেতে পারে, তখন তার একটা অংশ বন্ধুর মধ্যে দিয়ে পাঠিয়ে দেন।
সিনেমায় শৈলজা, একটি ছোট্ট মেয়ে। বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করে নিয়েছে, এই পক্ষের মেয়ের কথা না ভেবে। শৈলজা নিজের বাবা কে চোখে হারায়। কিন্তু সেই বাবা, বাবা নামের কলঙ্ক। মনের সেই ফাঁকা জায়গায় শৈলজার একটি বন্ধু থাকে, সেই গ্রামের ছেলে, নাম রবি। কিন্তু সেই রবিও যখন নিজের বাড়ীতে আগুনে পুড়ে মারা যায়, তখন আবারও শৈলজার ভেতর টা ফাঁকা হয়ে গেল। ঠাম্মা হোক বা দিদা, যার সাথে শৈলজা থাকে, সেও বা মনের কতটা কাছে আসতে পারবে...

অনেকগুলো বছর কেটে যায়। গ্রামে মানুষের সংখ্যা যত না বেশী, অশিক্ষিতের সংখ্যা তার থেকেও বেশী। সাধারন অক্ষরজ্ঞানটাই নেই। এমনি একটা সকালে গ্রামের মানুষ জড়ো হয় গুদামের সামনে। সেই দেওয়ালে লেখা রয়েছে কিছু কথা। সব্বাই দাড়িয়ে আছে, কারন পড়ার সাধ্যি কারোর নেই। তবে এটুকু বুঝতে পারে, যেটা লেখা সেটা খুব একটা সাধারন লেখা নয়। যে পড়তে পারে ওদের মধ্যে, সে এগিয়ে যায় এবং পড়তে শুরু করে জোরে জোরে। সেই কথা শুনে সবার লোম খাঁড়া হয়ে যায়। কি লেখা দেওয়ালে ?

ঠিক সেই মুহূর্তে গ্রামের এক কোনে একটি কুয়োর পাশ থেকে পাওয়া গেল দুটো দেহ, প্রাণহীন। একটি পুরুষ দেহ, আর একটি স্ত্রীর। কারা এরা ?
প্রতি মঙ্গলবার, একই ঘটনা রিপিট হচ্ছে। কিন্তু কেন ?

মঙ্গলবার লক্ষ্মী বার। প্রতি মঙ্গলে কি অলক্ষ্মী ভর করছে সারা গ্রাম কে ?
প্রতি মঙ্গলবার সারাগ্রাম জুড়ে নূপুরের ধ্বনি শোনা যায়। ঠিক কেউ যেন ছমছম করতে করতে দৌড়ে চলে যাচ্ছে। কে সে ?
গ্রামের ডাক্তার সেই কুয়োর পাশে যে অশরীরী কে দেখতে পান, সে কে ?
সব গুলিয়ে যাচ্ছে ?

হ্যাঁ সেটাই স্বাভাবিক। বছরের শেষ সময়ে একটা শেষ জোরালো কিছু দেবো না, তা হয় নাকি। সাউথ ইন্ডাস্ট্রি এই জন্যই সবসময় সেরা, রহস্য কীভাবে জটিল থেকে জটিলতর করতে হয়, সেটা ওদের নখদর্পণে। অথচ পেছনে রয়েছে একটা সাধারন ও অদ্ভুত সুন্দর গল্প।

সিনেমার গল্প বুঁদ হয়ে দেখার মত। গল্পের বুনন টানটান, বারবার সেটা বলছি না।
একটা ফিল্ম শুধু ফিল্ম নয়, একটি শিল্পকলা। দর্শক যেটা দেখে শেষ করার পরও অনুভূতি নিয়ে পরের বেশ অনেকটা মুহূর্ত কাটায় নিজের জীবনে। হাতে গোনা কয়েকটা ফিল্ম সেটা করে দেখায়।

ফিল্মের ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর, মারাত্মক ভাল। গেঁথে যাবে ভেতরে। মিউজিকে ঝাকুনি আছে। চেজিং করতে গিয়ে মিউজিক যে দৌড় করাতে পারে, সিনেমা দেখলেই বোঝা যায়। মনে রাখার মত, অনুভব করার মত বি জি এম, যখন তখন আক্রোশের রূপ নেবে। আর কষ্টে চোখ ঝাপসা করতেও পারে।

রিসেন্ট ‘ডুথা’ একটি সিরিজ দেখেছিলাম। সেখানে একটি পুলিশ অফিসার ছিলেন, যার অভিনয় এতটাই সুন্দর লেগেছিল, রাগে রি রি করছিল চরিত্র কে ফুটিয়ে তুলতে দেখে। সেই লোকটি এখানে ডাক্তারের ভূমিকায়। একটা অন্য রূপ দেখলাম ওনার, খুব ভাল লাগলো।

সিনেমাটি শুরুতে স্লো পেসে। কিন্তু আস্তে আস্তে গল্পের শেকড় নিজের বিস্তার নিয়েছে। ধীরে ধীরে সেটা বটগাছ এর ন্যায় দাড়িয়ে গেছে। সিনেমাটি কিছুটা হাতির দাতের মত দেখানো, সেটা অবশ্য একটা ঘটনা কে কেন্দ্র করে। হাতির যেমন দেখানোর দাঁত আর খাওয়ার দাঁত, দুটো আলাদা। এখানেও তেমনই একটা বিশেষ ঘটনা নিজের মতই ঘটছে, যার সাথে মূল কাহিনীর কোন ভাবেই সম্পর্ক নেই বলেই আমার মনে হোল। কোনটা সেটা বলা যাবে না আপাতত।

সিনেমার মেইন একটা চাবি রয়েছে, যাকে জুড়ে পুরো প্লট তৈরি হয়েছে। সেটা একেবারেই ডিসক্লোজ করবো না, তাহলে মজাটা নষ্ট হয়ে যাবে। হাল্কার ওপর দিকে বেশ অনেকগুলো ১৮+ দৃশ্য রয়েছে, যেটা খুব নিপুণ হাতে বানানো।

অনেকদিন পর এমন কিছু একটা দেখলাম, যেখানে রহস্যের পিছনে ধাওয়া করতে গিয়ে মূল ঘটনায় কষ্ট পেয়েছি। নিজেও সাইকোলজি নিয়ে নাড়া ঘাঁটা করছি অনেক দিন থেকেই, তাই ব্যাপারটা আমার কাছে নতুন নয়, তবে অভিনয়ে এমন ইমপ্লিমেন্টেশন ভাবতে পারিনি।
‘কানতারা’ এর মত এই সিনেমা, এমন ভেবে দেখতে বসে যেটা দেখলাম, সেটা এই বছরের টপ মোস্ট ক্রাইম থ্রিলার, ২০২৩ এর দেখা শেষ রহস্য।

#BengaliReview
#SamiranSamanta
©SamiranSamanta