দার্জিলিং জমজমাট
পর্ব – ৫
©সমীরণসামন্ত
একটা ভালো জায়গার খোঁজ দেবো দার্জিলিঙে ? যেখানে আপনি নিশ্চিন্তে ভরসা করে যেতে পারেন ? হ্যাঁ, খরচা একটু বেশি হবে, সস্তা না বলাই শ্রেয়, কিন্তু আজকাল হোটেল গুলো পয়সা দিয়েও সেই কাজ টা বা সার্ভিসটা দেয় না, যেটা এখানে ৯৯ ভাগ রয়েছে ( ১ ভাগ ফুটেজ খেলাম আমি ), তাহলে আমি বা আপনি কোনটা পছন্দ করবেন ? পয়সা দিয়ে ঠকবেন নাকি পয়সা দিয়ে অন্ধের মত আবিস্কার করতে ছুটবেন। কোনটাই না।
প্রথমেই বলে রাখি এটা কোন পেইড রিভিউ নয়, বা এমন কিছু নয় যেটাতে আর্থিক ভাবে আমার কোন রকম হেল্প হবে। অনেক পোস্ট দেখি যারা দার্জিলিং এর ভালো থাকার জায়গা খোঁজ করেন, তাদের জন্যই এই পোস্ট। গ্রুপে এর আগে মেঘালয়, পুরী, অন্ধ্রপ্রদেশ, ব্যাঙ্গালোর প্রভৃতি জায়গার কম বেশি পোস্ট আমি করেছি।
আসলেই যেই জায়গায় আমি থেকেছি, কম বেশি তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছে ( পুরী তে সব থেকে খারাপ, যদি জানতে চান, তাহলে কমেন্ট করে জানাবেন, চেষ্টা করবো হোটেল এর নাম সহ সবটাই বিস্তারিত জানানোর )।
যেখানে আমি রয়েছি , তেমন ভালো না বুঝলে সেই জায়গার পোস্ট আমি করি না, অনেকেই এই ব্যাপারে ওয়াকিবহাল।
কিন্তু দার্জিলিং এর এই হাউস জাস্ট এক কথায়, দারুন।
জাকির হুসেইন রোড এ পড়ে এই থাকার জায়গাটি। ম্যাল থেকে হেঁটে এলে, একদিক যায় গ্লিনারিস এর দিকে, বাম দিক যায় ঘোড়ার আস্তাবলের দিকে। ওই বাম দিক ধরে মিনিট তিন চারেক হাটা বড়োজোর, একটা জায়গা পড়ে, যেটা দুইভাগে বিভক্ত হয়ে গিয়েছে। বামদিক নিচে গিয়েছে, ডান দিক ওপরের দিকে গিয়েছে। ওই ডানদিকের রাস্তার দিকে তাকালেই দূর থেকেই নামটা জ্বলজ্বল করবে, মাগনলিয়া প্রথম বিল্ডিংটা ছেড়ে দ্বিতীয়টাই এই রেসিডেন্সির ঠিকানা।
আমরা বুক করেছিলাম বুকিং ডট কম থেকে। এই একটা ওয়েবসাইটের সাথেই কাজ করছে এই ম্যাগনলিয়া। মালিক মানুষটি নিঃসন্দেহে দারুন। সব রকম ভাবে উনি সাহায্য করেছেন আমাদের। যেদিন থেকে বুকিং করেছি, আর যেদিন ওখান থেকে বাড়ি ফিরেছি, পুরোটাই। যখন দরকার পড়েছে ফোন করেছি। প্রধান বাবুর বক্তব্য খুব পরিস্কার, উনি এই হাউসে একমাত্র ফ্যামিলির লোকজন কেই দেন। হই হুল্লোড় যারা করে, মাতলামি করে খাওয়া দাওয়া করে, সেসব থেকে উনি দূরে থাকেন, আর তাদের গেস্ট হিসেবে রাখেন না।
যাইহোক, আমরা ছিলাম ৩০১ নম্বর রুমে। ওপর তলায় রয়েছে। রুমের সাইজ একটা দম্পত্তির জন্যে যথেষ্ট। বিছানায় এক্সট্রা গদি রয়েছে, মানে একবার শুয়ে পড়লে ভেতরে ঢুকে যাবে। উঠতে ইচ্ছে করবে না একেবারেই, তার ওপর যদি ঠাণ্ডা থাকে তো কথা নেই। ঘরের সাথে বাথরুম যুক্ত, বেশ বড় মাপের পরিস্কার জায়গা, গিজার যুক্ত। যখন ইচ্ছে চালানো যায়। সাথে সাথে জল গরম হয় না, একটু লেট হয়, কারন পাহাড়ি এলাকাতে এটাই স্বাভাবিক। লন্ড্রি সার্ভিস রয়েছে। জল গরম করে খাওয়ার জন্যে একটা করে ইলেকট্রিক কেটলি দেওয়া সব রুমে। একটা আলমারি, ল্যান্ডলাইন ফোন।
আরও একজনের সাথে পরিচয় হোল, রাজু ভাই। ওখানের স্টাফ। বলতে পারেন ওখানের দেখাশোনা থেকে শুরু করে অল ইন অল। ছেলেটার বয়স মনে হয় ২৫ - ২৬ এর এদিক ওদিক হবে। ব্যবহার খুব ভালো, দিনাজপুরের ছেলে যতটা মনে পড়ছে। কখনও দরকারে সুবিধা অসুবিধা সবেতেই ওকে পাওয়া যাবে।
সত্যি কথা বলতে, ওনাদের ব্যাবহারটাই আমার সব থেকে বেশি ভালো লেগেছে। একটা জায়গা আমরা যারা ব্যস্ততার ফাঁকে ছুটি কাটাতে যাই, সেখানে চাই একটু শান্তি, একটু আরাম, ঝামেলা চাই না একেবারেই না। এমন একটা জায়গার উদাহরন এটা হতে পারে, যেখানে নিশ্চিন্তে রাত আরামসে কাটাতে পারবেন। টাকা দিয়ে আপনি আফসোস করবেন না।
রেট – সিজন অনুযায়ী, ২৫০০ – ৩৫০০ রুম পিছু। একজিকিউটিভ রুম ( ওপরে ) – ৫০০০টাকা।
বুকিং নম্বর / ওনার নম্বর / হোয়াটস্যাপ – ৯৮৩২৩৪৫০৪৩
পুনশ্চ – এটা কোন পেইড রিভিউ নয়। নিজের ভালোলাগার ফসল মাত্র। চাইলে নিচের ছবি দেখাতে পারেন বা আমার নাম বলতে পারেন, আশা করছি অবশ্যই উপকৃত হবেন।
ধন্যবাদ।
( ক্রমশ )
©সমীরণসামন্ত
#magnoliaresidency #homestayatdarjeeling #magnolia #wheretostayatDarjeeling
Comments
Post a Comment