দার্জিলিং জমজমাট
পর্ব – ৩
©সমীরণসামন্ত
সকালটা শুরু হয়েছিল একটু লেট করে। গতদিনে এসেছি, গায়ে হাত পায়ে ব্যাথা, ঠিক তা নয়। আসলে ঠাণ্ডার জায়গায় ঘুরতে এসেছি, এখানে এসে তাড়াহুড়ো করে কি লাভ। বরং দরজার বন্ধ করে ঠাণ্ডায় বরফ ফিলিং নিয়ে আরাম করে শুয়ে থাকার মত বিলাসিতা একটু করা উচিৎ। আফটার অল, ছুটি ইন দার্জিলিং।
ব্রেকফার্স্ট করতে হবে। বেড়িয়ে পড়লাম দুজনে। ঘড়িতে প্রায় আটটা বেজে দশ। আজকের প্ল্যানিং একেবারেই আনকোরা। পায়ে হেঁটে সফর হবে। কম পয়সায় কি করে ঘোরা যেতে পারে, তার একটা ছোট্ট ডেমো নেওয়ার জন্যে রাস্তায় বেড়িয়ে পড়লাম, স্নান সমস্ত কিছু কমপ্লিট করে।
ঘোরার আস্তাবল তা পেরোনোর ঠিক আগেই একজন বয়স্ক মানুষ বসে রয়েছেন, সঙ্গে চা। সকালে এই লাল চা টা গলায় ঢালতে ঢালতে একটা ম্যাল এ টুকি মারালাম। লোকজন ভালই আছে। তবে একটু ফাঁকাফাঁকা। সেই মুহূর্তটা বেশ উপভোগ করার মতই। দেখা হয়ে গেল আমাদের সাথে সেই দাদা দিদির সাথে, যারা গতকাল আমাদের সাথে এক সাথেই দার্জিলিং এসেছেন।
বামদিক দিয়ে ম্যালরোড ধরে দুজনে এগলাম। সেই ( আশা ) গ্লিনারিস এর সামনে সকালেও ভিড়। আমার মনে হয় সরকার থেকে জায়গাটা বাধিয়ে রেখে দেওয়া উচিৎ আর একটা চার্জ ধার্য করলে বেশ কামাই হবে ( তখন আবার কেউই ফটো তুলতেই আসবেনা, কি মুশকিল )। মজা করছি আর কি।
সেই ভীরে আমিও একটু দাড়িয়ে গেলাম। মহামূল্যবান ফটো তুলে রাখতে হবে যে। ওটা না করলে দার্জিলিং ঘোরা নাকি অসম্পূর্ণ থাকে। না এখানে খাওয়া পরে হবে, এখন আপাতত যাবো কেভেন্টার এর উদ্দেশ্যে। কিন্তু সেই ভাবনটাই আমাদের ভুল হয়েছে, পরে বুঝলাম।
কে জানত, এই সক্কালেও এতটা লাইন। ওরে বাপ, এতো ম্যালরোড ছাড়িয়ে যাবে আর একটু হলে। কি ক্রেজ, বাপ। ব্রেকফাস্ট নিতে এসে লাঞ্চে বসতে হবে। গ্লিনারিস এ আবার গেলাম, সেখানেও একই অবস্থা। তাছাড়া আমাদের প্ল্যানিং টাই যে মাটি হয়ে যাবে। না না, দাড়িয়ে অপেক্ষা করার কোন মানেই হয় না। প্ল্যান একটু পাল্টাতে হবেই।
বামদিকে গাড়ির পারকিং রেখে এগিয়ে গেলাম, কুঙ্গা রেস্টুরেন্ট এর দিকে। লেহ, এটাও বন্ধ। মানে এতো সকালে খোলে না। আজ কি নে খেয়ে ব্রেকফাস্ট হবে নাকি। না না, পাশে ডেকাভ’স আছে তো।
পরিবেশ খুব সুন্দর। বাইরের ঠাণ্ডা বাতাস ঢুকছে অল্পস্বল্প। গৌতম এর স্মরনবাণী মৃদু শব্দে বেজে চলেছে। মুড আপনে আপ পাল্টে যায়। খাওয়ায় ইচ্ছেটা যেন আরও একটু বেড়ে গেল যে।
পরক মোমো, চিকেন মোমো, সঙ্গে হানি লেমন অর্ডার হোল। সঙ্গে একটা চকোলেট কফি না কি যেন ছিল সত্যি মনে নেই। খাবার কিন্তু বেশ ভালো, টাটকা অবশ্যই আর সুস্বাদু। শপ ওনার/ম্যানেজার একজন লেডি ছিলেন। ব্যাবহার অত্যন্ত ভালো।
শপের রিভিউ গুগুল এ দেওয়ার পরিবর্তে আমাদের একটা গিফট দিলেন, যেটায় ছিল একটা পোস্ট কার্ড, একটা ওয়াল ম্যাগনেট, একটা বুকমার্ক। ওনার নিজের বানানো।
সকালের খাবার, জমজমাট। এবারে আমরা যাবো হিমালয়ান জুলজ্যিক্যাল পার্কে, একটু অন্য ভাবে।
ম্যালরোড থেকে নিচে নামার পর ট্যাক্সি স্ট্যান্ড। সেখানে অনেক ড্রাইভার রয়েছে। আপনাকে সারাদিনের ঘোরানোর জন্যে বলবে।
আমরা আসলে ওই জু তে যাবো, তারপর তার পাশে রোপওয়ে তে। ব্যাস এটুকু করেই ফিরে আসবো। কিন্তু এখানে যে সকল গাড়ি রয়েছে তারা নয়তো রাউন্দ ত্রিপ করতে চায় সারাদিনের জন্যে, অথবা একটা থোক টাকা চায় শুধু ওখানে নিয়ে যাওয়ার জন্যে। আমাদের একজন যেমন বলল ১০০০টাকা নেবে। শুধু ছেড়ে আসবে বলে, কারন তাকে অনেকটা ঘুরে আসতে হবে তাই।
কারসাজিটা আমরা এখান থেকেই শুরু করলাম।
জিজ্ঞেস করে জানতে পারলাম, ওদের একটা সুপার মার্কেট প্লেস রয়েছে, দার্জিলিং থেকে বেশ কিছুটা নিচে। যেখান থেকে শেয়ার এ গাড়ি ছাড়া হয়। একটা ব্যাপার আমরা জানতাম, এখানের লোকাল মানুষরা নিশ্চয় যাতায়াত করে। কিন্তু কিভাবে ? সাইকেল তো এখানে চলবে না, আর বাইক তো সব্বার সম্ভব নয়। তাহলে নিশ্চয়ই পাবলিক ভেহিক্যাল রয়েছে, যেটা আমরা টুরিস্ট রা জানতে পারিনা।
মহাকাল রেস্টুরেন্ট কে বামে রেখে আমরা এগিয়ে চললাম নিচের দিকে, মেইন রোড বরাবর। বেশ অনেকটা সময় লাগলো মার্কেট প্লেসে যেতে। যেহেতু প্রথম বার, তাই চিনে যেতে একটু সময় লাগছিল। হাটতে হাটতে পাহাড়ি রাস্তায় ম্যাপ দেখার হ্যাপা আছে। ওপরে না নিচে পয়েন্ট করতে পারে না। কিন্তু আপনাকে দেখাবে আপনার সামনেই রয়েছ। তাই কনফিউশন দূর করতে মানুষজন কে জিজ্ঞেস করে করে পৌঁছে গেলাম।
হ্যা,শেয়ার কার রয়েছে। জায়গার নাম সিংমারি সম্ভবত।
কারের চার্জ, কতটা কম, শুনলেও কান খারাপ হয়ে যায়। আমার অন্তত তাই হয়েছিল। বয়স্ক ড্রাইভারটি আমাদের বললেন, ফিফটি রুপিস ইচ। ও তাহলে ১০০ টাকায় কাজ হয়ে যাবে।
সাথ সাথ আমার বৌ বলল, আমি নাকি ভুল শুনেছি। আবার জিজ্ঞেস করলাম।
উনি আসলে ফিফটিন বলেছেন। ওরেবাস, মাত্র ত্রিশ টাকা। হ্যাঁ, সত্যি তাই। আমি ভুল শুনেছিলাম।
মাত্র ত্রিশ টাকায় আমরা জু তে চলে এলাম। কোথায় ১০০০, আর কোথায় ৩০, ভাবা যায় ?
১১০ টাকা টিকিট মুল্য জন প্রতি। জু সঙ্গে এইচ এম আই মিউজিয়াম এর এন্ট্রি একসাথে কেটে নেওয়া হয়। বড় ক্যামেরা নিয়ে ঢুকলে খরচা আলাদা।
শেষবার এখানে এসেছিলাম, আজ থেকে দশ বছর আগে। সদ্য গ্রাজুয়েট হয়ে। সেদিনের জু ছিল দুর্গাপূজার আবহাওয়া তে। বর্ষাঘেরা পাহাড়, সঙ্গে মেঘ কুয়াশার মিশ্রণ ছিল। মেঘে ঢাকা জু, সঙ্গে ভারী কুয়াশা রেড পাণ্ডা কে মাতিয়ে রেখেছিল। কিন্তু আজকের জু, বেশ অনেকটা পাল্টে গিয়েছে।
এবারে একটু শুকনো কাঠখোট্টা অভিজ্ঞতা পেলাম। তবে যেটাই হোক, মন ভালো করার জন্যে, ঘোরার জন্যে যথেষ্ট। কালো চিতা, প্যান্থার আর রয়্যাল বেঙ্গল অন্যতম আকর্ষণের মধ্যে পড়ে।
মিউজিয়ামের অভিজ্ঞতা কিন্তু আরই ভালো। হয়তো একটু বড় হয়েছি তাই, বোঝার ক্যাপাসিটি আরও একটু বেড়েছে, সেই জন্যে এই ভালোলাগা। ‘ভূগোল’ ব্যাপারটা আমার গায়ে জ্বর এনে দিত। এই ভূগোল আর ইতিহাস আমার ভয়ের বিষয় ছিল, আর আমার সায়েন্স নিয়ে পড়ার একটা বিশেষ উদ্দেশ্য ছিল এই ভয় গুলো কে দূরে যাতে রাখতে পারি।
হিমালয়ের পাদদেশ থেকে শুরু করে উৎস, সেখানের গাছপালা, পশুপাখি সবকিছুর একটা সুচারু বর্ণনা রয়েছে। তেনজিং নরগে কি কি ব্যাবহার করতেন বরফে উঠতে গিয়ে ইত্যাদি সব কিছু ওখানে খুব ভালো ভাবে সংরক্ষণ করা রয়েছে। ভালো লাগলো সেই ঈগল পাখির শেষ অস্তিত্ব দেখে। অতার দারুন একটা গল্প রয়েছে।
ঘণ্টাখানেক পরে, আমরা বেড়িয়ে পড়লাম জু ছেড়ে।
এবারের গন্তব্য রোপওয়ে। দার্জিলিং এর এই ব্যাপারটা না করলে একেবারে মিস। কিন্তু যাবো কি করে।
ফন্দি এসে গেল। নিচে নেমে একজন মহিলার কাছ থেকে কিছু জিনিষ কিনছিলাম। ওনাকে জিজ্ঞেস করতেই জানতে পারলাম, নিচের রাস্তা না ধরে সোজা এই রাস্তা ধরে গেলেই রোপওয়ে পাওয়া যাবে। ওনারা ওই রাস্তাতেই যাতায়াত করেন। ওটাই শর্ট কাট।
ব্যাস, হাটি হাটি পা পা, যেথা ইছে সেথা যা।
দুজনে কিছু ম্যাপ কে লক্ষ্য করে এগোতে থাকলাম একটা নির্জন রাস্তা ধরে, জু এর পাশ দিয়ে। গাড়ি না ধরেই আরামসে এখান থেকে যাওয়া যায়। সিঙ্গেল বা কাপল থাকলে এই হাটতে থাকার ব্যাপারটা আপনারা দারুন উপভোগ করতে পারবেন।
কিছুটা যাওয়ার পর বোঝা গেল, এখানে লোকাল মানুষরা থাকেন। এই রাস্তায় বাইরের গাড়ি খুব একটা যাতায়াত করে না। পায়ে হেঁটে যাওয়ার পথে এনাদের বাড়ি গুলো, বেশ লাগছিল দেখতে। ঠিক যেন কাছের মানুষ। মনে হচ্ছিল, একটু যদি এই সব ঘরে থাকতে পারতাম, বেশ লাগতো। আর কোলকাতায় ফিরবো না।
মিনিট দশ পর পৌঁছে গেলাম রোপওয়ে র স্থানে। এবারে আমার মনোবাঞ্ছা পূর্ণ হোল না। বাজে সবে একটা চল্লিশ। দেড়টায় নাকি আজ দরজা বন্ধ করে দিয়েছে। ভেতরে টুরিস্ট লোক গিজগিজ করছে লাইনে। এতগুলো মানুষকে সময়ান্তরে চাপাতে চাপাতেই নাকি বিকেল গড়িয়ে যাবে। এতো চাপের জন্যে ওদের এই ডিসিশন। মন খারাপ হোল বইকি। কষ্ট করে এসেছি বলে নয়, এক্সপ্লোর করতে এসেও এটা করতে পারলাম না। ব্যাড ল্যাক মেনে নিলেও মুহূর্ত খানেক দাড়িয়ে ছিলাম ওখানে। না ছবি তুলিনি। আগামীকাল আসবো ভেবে মন শান্তি করলাম ( আদেও আসবো কিনা সন্দেহ আছে )।
এবার ঘরে ফেরার পালা। ঘড়িতে ২টো বাজে। নিচে রাস্তায় নেমে পড়লাম। পাশে একটা স্কুল রয়েছে। ঠিক ‘ম্যা হু না’ ফিল্মের কলেজের মত কিছুটা দেখতে। পাস দিয়ে একটা শেয়ার কার বড় গাড়ি চলে যাচ্ছে। আমাদের দুজন কে দেখে জিজ্ঞেস করলো, কোথায় যাবো।
কুড়ি কুড়ি চল্লিশ টাকার বিনিময়ে আমাদের ওই স্ট্যান্ডের কাছাকাছি ছেড়ে দেওয়ার কথা বলল। আমরাও রাজি হয়ে গেলাম। বলে রাখা ভালো, সেই ড্রাইভার ভদ্রলোক একটু অন্য ধরনের। সারা রাস্তা আমরা দুজনেী এলাম, খালি গাড়ি। মাঝে একটা বড় ফ্যামিলি প্যাক মানুষরা হাত দেখালেন, উনি একটু স্লো করলেন। ওদের কথা ওনার ভাললাগেনি তাই ছেড়ে চলে এলেন। অদ্ভুত লাগলেও অন্য একটা ভালো লাগা কাজ করলো, একেই মন খারাপ, তার ওপর একটু চুপ চাপ থাকাই ভালো।
কিন্তু তারপরেই যে ভালোলাগা দ্বিগুণ গতিতে আমাদের দিকে আসছে, তা কে জানত।
ওপরে উঠে সুপার মার্কেট পেরিয়ে ম্যাল রাস্তা ধরে যখন গেলাম, কেভেনটার ফাঁকা, কোন লাইন নেই।
ধরমরিয়ে দুইজনে ভেতরে ঢুকলাম। সিঁড়ি ক্রস করে ওপরে উঠতে যাবো, একজন বললেন একটু দাড়াতে। একটা সিট ফাঁকা হলেই আমাদের ডেকে নেবে। ওমা, ঠিক পর পরই শুনলাম, “ আপনি লাস্ট ? “, আমার পেছন থেকে কোন একজন বলে উঠলেন। দেখলাম, আবারও একটা ফ্যামিলি প্যাক ভর্তি করে লাইনের দাড়িয়ে পড়েছে। তারপরে আবার লাইন বেড়িয়ে গেল বাইরে। উফ, সাংঘাতিক সময়ে এসে পড়েছি তাহলে।
আর তারপর সেই সিট টা পেলাম, যেটা সব্বার পছন্দের এবং চাহিদার হয়, সেই বিখ্যাত ব্যালকনি সীট।
অভিজ্ঞতা বলতে গেলে মাঝারি। সকালের ভীর পেরিয়ে স্টাফরা একটু ক্লান্ত। নতুন গেস্টদের অর্ডার নিতে আসাতেও যেমন লেট, তেমনি ডেলিভারি দিতে আসার সময়কালও তেমনই। আমরা বসে বসে ছবি তুলতে তুলতে বিরক্ত হয়ে গেছিলাম আর কি। শেষমেশ সামনে গিয়ে একরকম ধরেই নিয়ে এলাম ওয়েটার কে।
লিস্টে ছিল পরক প্ল্যাটার। সঙ্গে কোল্ড কফি।
মিনিট পনের পর এলো প্লেট প্লেট ভর্তি খাবার, জাস্ট মন ভরানো। এই প্রথম বার সসেজ ট্রাই করলাম, দারুন। আরও বেশ কটা জিনিষ ছিল নাম বলতে পারছি না, কারন খাওয়াতে এতোটাই ব্যাস্ত ছিলাম যে আলাদা করে নাম গুলো আইডেনটিফাই করার সময় হয়নি।
মিঠে রোদ, ঠাণ্ডা বাতাস, দার্জিলিং, কেভেন্তার এর ছাদ এই কম্বিনেশনটা আশা করছি টুরিস্টরা এঞ্জয় করে। আমরাও করেছি। একটু বেশি করেছি, কারন খাবারগুলো সুস্বাদু ছিল।
সব্বার ক্ষেত্রে একটাই কথা, কেভেন্তার ট্রাই করতে হলে নয়তো ঘুম থেকে উঠে সক্কাল সক্কাল ব্রাশ করতে করতে লাইন দাও, নয়তো ভরদুপুরে আসো। সিট কনফার্ম ( আশা করছি )।
খাওয়া শেষে একটু রুমে ফিরতে হবে। কারন অনেকটা হাঁটাহাঁটি হয়ে গিয়েছে। পাহাড়ি রাস্তায় তেমন কিছু মালুম হয়নি, কিন্তু তবুও সেই সক্কাল থেকে বেরোনো, এখন বাজে তিনটে ত্রিশ।
রুমে ছিলাম প্রায় ঘণ্টা দেড়েক। ফোনে চার্জ দিয়ে একটু চোখ বন্ধ করে ফেললাম। না ঘুম আসেনি। পরিবর্তে সারাদিনের ঘোরাঘুরির গল্প গুলো বেশ মনে আসছিল। একটু পরে বেড়িয়ে কোথায় খাবো, কি খাবো সেই নিয়ে কথা চর্চা চলছে। আজ আমরা একটা দারুন শর্টকাট আবিস্কার করলাম, সেই ব্যাপারে নিজেরাই দারুন উৎসাহিত।
বাজে প্রায় সাড়ে ছয়। আবার বেড়িয়ে পড়লাম খাইখাই পর্বের উদ্দেশ্যে। পেট যদিও ভালই ভরা। আজ আর টিফিন করতে হবে না। তবে একটু মুখ মুখোশে কিছু খেলেও মন্দ হয় না।গতকাল পেস্ট্রি খেয়েছিলাম। আজ কিন্তু ওসব চলবে না আগেই বলে দিয়েছি। তাই ভাবনাটা এসে শেষ হোল চিকেন পিসের কাছে। পিস মানে লেগ পিস আর কি। কেভেন্তার এর ঠিক পাশেই দুইজন এল সেপ এ কাউন্তার রেখে গাড়ি গুলোর সামনে বিক্রি করছে।
রাতের খাবার খাওয়ার ব্যাপারে একটা ব্যাপার লক্ষণীয়। ডিনার খেতে হলে সন্ধ্যে সাত থেকে সাড়ে সাতটার মধ্যে ভেবে নেওয়া ভালো। কারন এমনিতেই বেশ লাইন পরে ভালো ভালো রেস্টুরেন্ট এ। ৯টার পর এমনিতেই ফাঁকা হয়ে যায়, আর তারাও আর কাস্টমার একসেপ্ট করে না।
আমরা পৌঁছে গিয়েছিলাম আবারও, সেই কুঙ্গা বন্ধ ছিল না, কিন্তু আর নতুন কাউকে আলাউ করলো না। অগত্যা তার পাশে ডেকাভ’স এ আবারও। সকালের পরিবেশ আর রাতের পরিবেশ সম্পূর্ণ আলাদা।
টিমটিম করে আলো জ্বলছে, ভেতরটা ভিড়। আর সেই জন্যই বাইরে ভালই লাইন পরে গিয়েছে। আমরা দুজনে মনস্থির করলাম, একটু লেট হোক। এখানেই হালকা কিছু খেয়ে বিদায় নেবো।
বাইরে দাড়িয়ে কি খাবো ঠিক করে নিলাম ওদের মেনুকার্ড দেখে।
প্রায় চল্লিশ মিনিট পরে আমরা ঢুকলাম। পরক চিলি আর মিক্সড রাইস সঙ্গে লেমন সোডা।
পরিমান বেশ ভালই দিয়েছিল। কিছু খেতে হবে এমন মনোভাব থাকলেও খাওয়ার সময় আমরা বেশ গোগ্রাসে মেরে দিয়েছি।
পেট মোটামুটি আলুথালু ভাব নিয়েছে। বেড়িয়ে একটা লিমকা নিলাম। রেস্টুরেন্ট এ লেমন সোডায় যে পুদিনা পাতা দিয়েছিল ওগুলো লিমকার বোতলে দিয়ে খেতে শুরু করলাম। টেস্টের পরিবর্তন হয়েছিল যত না বেশি, তার থেকে বেশি ঝাড় খেয়েছিলাম এক জনের কাছ থেকে।
আপাতত গুড নাইট। কাল তো দোল পূর্ণিমা। দেখা যাক, নতুন কি করা যায়।
এই এপিসোডটি ক্যাপচার করার চেষ্টা করেছি, সম্ভব হলে দেখবেন
https://youtu.be/Ynf9GiioAnA
( ক্রমশ )
©সমীরণসামন্ত
#darjeelingblog #darjeelingbengaliblog #blog #hmi #dekavars #dekevars #keventer's #nightatdarjeeling #himalayanzoologicalpark
#darjeeling
©সমীরণসামন্ত
#darjeelingblog #darjeelingbengaliblog #blog #hmi #dekavars #dekevars #keventer's #nightatdarjeeling #himalayanzoologicalpark
#darjeeling
Comments
Post a Comment