=====================
পুস্তক পরিচয়
=====================
#রিভিউ
#review
#পাঠপ্রতিক্রিয়া
©সমীরণ
==================================
==================================
অনুবাদক – সৈকত মুখোপাধ্যায়
প্রকাশক – অরন্যমন
প্রকাশকাল – বইমেলা, ২০২৩
মুল্য – ২২৫টাকা
==================================
বেশীরভাগ বন্ধুরা আমায় ধরে আছাড় দেবে,
কারন আমি নাকি সত্যি কথা বড্ড বেশি লিখি, রিভিউ লিখতে গিয়ে। কিন্তু বিশ্বাস করুন,
একটা কথাও আমি বানিয়ে লিখি না, সবটাই আমার ব্যাক্তিগত ভাবনা, যেটা লেখা দরকার,
জানানো দরকার। ২০২৩ বইমেলা থেকে সংগ্রহ করা বইয়ের মধ্যে থেকে এখনও পর্যন্ত তেমন বই
কাউকেই সেইভাবে পয়েন্ট করতে পারছি না, যেটা পড়ে খুব বেশি মাত্রায় আনন্দ পেয়েছি।
তার মধ্যে আজকের এই বইটি রয়েছে ( অ্যারেস্ট করবেন না পিলিজ )।
সৈকত বাবুর সাথে প্রথম পরিচয় “
ঈশ্বরের নষ্ট ভ্রুন “ বইয়ের মাধ্যমে। তুফান গতিতে কোন গল্প, শুধু গল্প নয় চোখের
সামনে ভেসে উঠলো একটা ছবি। তৎপরতার সাথে একটা দুর্দান্ত ক্লাইম্যাক্স দিয়ে শেষ
করলো বইয়ের প্রথম গল্প। তারপর থেকেই আমি ওনার প্রতি একটু বেশি ভাবনা চিন্তা করতে
শুরু করলাম, গল্পের বইয়ের কালেকশন এর ব্যাপারে। এই বারে ওনার দুটি বই কিনেছি, যার
মধ্যে এটা ওনার সম্ভবত প্রথম অনুবাদ সাহিত্য ( যদি না খুব ভুল করি আমি )।
মোট সাতটি বিদেশী গল্প ( খ্যাতনামা লেখক, যাদের এক কথায় সব্বাই কম বেশি চেনে ) এর
অস্তিত্ত্য হয়তো আমাদের জানা হয়ে উঠত না যদি না লেখক সেটা আমাদের সামনে আনতেন।
কিছু আতঙ্ক, ভয় সঙ্গে সাই-ফাই এর মিশ্রণ, কোথাও আবার চেনা মুখে অচেনা মানুষ এরই
একটা ছোট্ট সংস্করণ এই বই। মোটের ওপর আমি পড়তে গিয়ে অনেক জায়গায় ভয়ের নতুন চেহারা ফেস
করেছি। বেশ ভালো লেগেছে, তবে সব গল্প নয়।
অনুবাদ সাহিত্য নিয়ে কাজ কতে গেলে অনেক কিছুই সমস্যা হিসেবে আসে।
প্রথমত, গল্পের সিলেকশন। যে লেখক সেটা করছেন, সেটা তার পছন্দ অনুযায়ী। পাঠককুলের
মধ্যে সেটা আসলেই ভালোবাসা আদায় করতে পারবে কিনা সেটা একটা বড় প্রশ্ন। এই দিক থেকে
আমার কিন্তু মোট তিনটে গল্প ভালো লেগেছে, “ অমানুষের মেলা “ সেরা।
দ্বিতীয়ত, গল্পের অনুবাদ খুব বড়
একটা কাজ। ভাবানুবাদ আর আক্ষরিক অনুবাদ এর মধ্যে ব্যালান্স রাখতে না পারলে কিন্তু
গল্প পড়ার মজাটা মাটি হয়ে যায়। গল্পের আসল চার্মটা পাঠকের কাছে ততটা সামনে আসতে
পারে বলে মনে হয় না। যেহেতু লেখক বিভিন্ন বিদেশী লেখকের লেখা অনুবাদ করতে চেষ্টা
করেছেন, সেক্ষেত্রে এই ব্যালান্স টা কোথাও একটু হলেও এদিক ওদিক হয়েছে, আমার
তেমনটাই লাগলো। “ অমানুষের মেলা “ গল্পটা যেমন ভালো, সিলেকশন শুধু নয়, এর
ভাবানুবাদ তাও খুব নিখুঁত ভাবে করা হয়েছে বলে আমার মনে হয়।
তবে এক্ষেত্রে আরও একটা কথা বলতে চাই আমি। লেখকের নিজস্বতার জন্যে আমি ওনাকে পছন্দ
করি, ওনার নিজের লেখা আমার বেশি ভালো লাগে। অনুবাদের দিক থেকে গল্পের সিলেকশনটা
ঠিক যুতসই লাগলো না। আবার এটাও হতে পারে আমি এই গল্প গুলো খুব একটা পছন্দ করি না,
তাই এমন মনোভাব।
বইয়ের কভার পেজের ছবিটি নিয়ে কিছু বলি। অবশ্যই শিল্পীর স্বাধীনতা রয়েছে এই
ব্যাপারে। যে কেউই এই ছবি দেখলে আকৃষ্ট হবেন, কিন্তু একটা নেগেটিভ ইম্প্যাক্ত এর
মাধ্যমে ছড়াবে। পায়ের চাপে একটি কুকুরের ছানা কে চাপ দিয়ে দেওয়া হচ্ছে, তাকে মেরে
ফেলার চেষ্টা করা হচ্ছে। যদিও এটা কোন কুকুর নয়, একটি গল্পের প্লটের ওপর ভিত্তি
করে এটা বানানো। কিন্তু কেন ? হঠাৎ কেউই দেখলে এটা তো কুকুর ভাববে। সমাজে কুকুর কে
আলদা ভাবে আমরা দেখি। সেক্ষেত্রে এই ছবি ভেতরের গল্পের থেকেও অজান্তেই বেশি আঘাত
দিয়েছে।
“মাস্টারস্ট্রোক” হতে পারতো, “মাস্টারপিস” হতে পারতো, কিন্তু এটা কোন ভাবেই সেই
জায়গা আমার মতে নিতে পারল না। মন একটু খারাপ, তবে একটা ভালো খবর হোল, ওনার নিজের
লেখা আরও একটি বই কেনা রয়েছে, ওনার স্বাক্ষর আমি নিয়েছি মেলায়। আশা করছি হতাশ আর হবো
না।
( এরপর থেকে অনুবাদ সাহিত্য একটু এড়িয়ে চলতে হবে আমার মনে হয়। কারন কিছু গল্প সেই
ভাষাতেই ভালো, যাতে লেখা রয়েছে। ভাষান্তরিত করতে গিয়ে ফ্লেভার নষ্ট হওয়ার প্রবল
চান্স থেকেই যায়। )
#সমীরণসামন্ত
#মাস্টারস্ট্রোক
#রিভিউ
#পাঠপ্রতিক্রিয়া
©বাতাসবাবুরপাতা
©সমীরণসামন্ত
Comments
Post a Comment