Chup! - 🆁🅴🆅🅸🅴🆆

 🆁🅴🆅🅸🅴🆆
=======================                          
Chup!
=======================
সাল - ২০২২
প্লট – ক্রাইম, রহস্য, থ্রিলার ======================
ভাষা – হিন্দি
দেশ – ভারত
=======================
আই এম ডি বি – ৮.৮ / ১০
নিজস্ব রেটিং –   ৬ / ১০
=======================
©SamiranSamanta

সাংঘাতিক। মহা বিপজ্জনক ব্যাপার আমার জন্যে। হ্যা আমার জন্য, ট্রেলার টা দেখে তেমনটাই মনে হল। কারন অল্প বিস্তর হোক, বেশ কিছু ফিল্মের রিভিউ করে ফেলেছি এই কিছু বছরে। সংখ্যায় ১১৮ হলেও হিসেব অনুযায়ী তার থেকেও বেশি। সেই রিভিউর ফলাফল যদি প্রাণঘাতী হয় ?
হ্যা ট্রেলার দেখে সেই নিয়েই চিন্তায় ছিলাম। কারন সিনেমার আসল কাহিনী সেই সাইকোপ্যথ কিলার কে নিয়ে যে ক্রিটিক দের বেছে বেছে ওপরে পাঠায়। শুধু তাই না, বেশ ভয়ানক পথ অবলম্বন করে।
ভাবনাচিন্তা পাশে রেখে সিনেমটি দেখতে শুরু করেও দিলাম।

আর এখন কি বলবো ? রিভিউ করবো ?
যদি কিছু ঘটে যায় ? তাহলে কিন্তু আর পরের সিনেমার রিভিউ দেওয়ার মত আমি আস্ত থাকবো কিনা সন্দেহ আছে। যেটা বলি, সবসময় সত্যি বলি, নো বায়াসড অপিনিয়ন।
যাকগে, যা হবে দেখা যাবে।
তাহলে শুরু করি রিভিউ কিসসা, বিনা ডরকে।

ট্রেলার দেখে বেশ চমক লেগে গিয়েছিল। তাই সেটাই পূর্ণ করতে আজকের সিনেমা দেখা। হিন্দি সিনেমা দেখতে বসতে এখন আর তেমন ভালো লাগে না। কারন সেই কোন না কোন ভাবে একই স্টোরি লাইন রিপিট হবে, কাহিনী হবে সংক্ষিপ্ত, বরং অতিরঞ্জনের পরিমান বেশ বেশি।
তবে “ চুপ “ সিনেমাটি কিন্তু সেই জায়গা থেকে একটু হলেও নিজের পরিচয় বহন করতে সক্ষম হয়েছে।

কাহিনী একটু আগেই বলে দিয়েছি। তাও আর একটু ভালো ভাবে বলছি। তো সিরিয়াল কিলারটি সেই সব ক্রিটিক দের মেরে ফেলে, যারা প্রকৃত অর্থে রিভিউ না দিয়ে পয়সার পরিবর্তে জাস্ট একটা বিজ্ঞাপন দেয় সেই সিনেমার। এক প্রকার হাইপ তৈরি করে ফেলে। বেশিরভাগ মানুষ আজকাল ইলেক্ত্রনিক প্রোডাক্ট থেকে শুরু করে ঘরের আসবাব পত্র নেওয়ার সময় রিভিউ ফলো করে। স্বাভাবিক ভাবেই সিনেমা দেখার ক্ষেত্রে রিভিউ দারুন ভাবে গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু পাবলিক যে কারনে সিনেমা দেখতে যায়, গিয়ে যদি মনে হয় তার সময় ও পয়সা, দুটোই নষ্ট হয়ে গেল তখন ? তার দায় কে নেবে ? এটা খুব স্পষ্ট হয়ে যায়, সেই ক্রিটিক সঠিক রিভিউ লেখেনি। তার লেখার পেছনের উদ্দেশ্য পাবলিক এর স্বার্থের ব্যাস্তানুপাতিক।
কিলার সেই সব ক্রিটিকদের টার্গেট করে।
ব্যাস, এটাই স্টোরি।

কাহিনীতে ইন্সপেক্টর এর ভূমিকায় দেখা গেছে আমার বেশ পছন্দের মানুষ, সানি দেওয়াল কে। অভিনয় নিয়ে তো কোন কথা বলছি না। তবে মাঝে মধ্যে ওনার চেহারায় হাসি মুখটা অনেক জায়গায় কমিক মুহূর্ত তৈরি করে, যেটা আমার মতে দরকার ছিল না। তবে অনেক দিন পর ওনাকে দেখে, জাস্ট মন ভরে গেছে।

সাইকোপ্যাথ ইনভেস্টিগেশনে আরও একজন যুক্ত ছিলেন, পূজা ভাট। অনেক দিন পর ওনাকেও স্ক্রিনে দেখে বেশ ভালো লাগল। তবে সানি দেওয়াল থাকতে ওনার ওপরে এতো কঠিন দায়িত্ব পুরোটা না দিয়ে একটু ভাগ করে নিলে মনে হয় ফোকাস টা সমানে সমানে আসত। তো যাইহোক, দুল্কার সালমান কে আমি সম্ভবত প্রথম স্ক্রিনে দেখলাম। অভিনয় কিন্তু বেশ সুন্দর। একজন ফুলের দোকানের মালিক হিসেবে না মানালেও অভিনয়ে বাকিটা মেকআপ হয়ে গিয়েছে। চলবে চলবে।

সব থেকে ভালো লেগেছে হিন্দি সিনেমায় নতুনত্বটা। সব্বাই যেখানে একই রকম সিরিয়াল কিলিন ভাবছে, সেখানে গল্পকার কিন্তু গল্পের মধ্যেই কিলার কে নিয়ে বেশ নতুন ধরনের একটি গল্প দিয়েছে আমাদের কে। বলতে হবে, বেশ সাহসী চিন্তা ভাবনা। এমনটাই কিন্তু দরকার আজকের দিনে।

সিনেমা তে শুধু অভিনয় নয়, ভালো গল্প, যথাযথ পরিবেশ, সমস্তটাই দরকার। আজকার মানুষরা নতুন কিছু আশা করছে। সেই জায়গায় বেশ ভালো মত জায়গা করতে চলেছে “ চুপ “।

তবে এতোটা হাই আই এম ডি বি রেটিং হওয়ার কথা নয়। আমার মত মানুষ যারা এই ধরনের সিনেমা দেশ বিদেশের গল্পের সাথে মিলে মিশে আছে, তাদের কাছে এই সিনেমা নতুন প্রয়াস মনে হবে, তবে কোন ভাবেই এতোটা আনন্দ দিতে পারবে না। অনেক জায়গায় বেশ কিছু সমস্যা চোখে পড়বে আশা করছি।

কাহিনির প্রথম অর্ধে খুন হয়ে যাবে দুমদাম করে। দৃশ্যে বেশ গা কাঁটা দেওয়া দৃশ্য যুক্ত হয়েছে। কিন্তু ব্যাক্তিগত ভাবে মনে হয়, গল্পটা ইন্তারভ্যালের আগেই ঘেঁটে গেল। কারন ?
আসল কিলার কে স্ক্রিনে দেখা গেল। খুব নিপুনতার সাথে সে তার কাজ সারছে।
গণ্ডগোলটা ওখানেই শুরু।

আমরা যখন কোন থ্রিলার ফিল্ম দেখতে শুরু করি, নিজেরাও আসলে ডিটেকটিভগিরি করতে থাকি। আসল খুনি কে আমরাও মাথা খাটাতে থাকি। শেষ এ মিললে ভালো, না মিললেও অবাক হতে ভালো লাগে।
কিন্তু এ ক্ষেত্রে খুনি রিভিল হয়ে গেল। অর্থাৎ আমাদের মাথা খাটানো বন্ধ।
এবার কি দেখবো আমরা ?
এই মুহূর্তে বাঁচাতে পারে একটা সুন্দর গল্প, যেটা দর্শক কে সীটে বসিয়ে রাখতে বাধ্য করবে। কিন্তু সেটা যদি না থাকে, তাহলে একটু মুস্কিল। এক্ষেত্রে সেটাই হয়েছে। সমগ্র শেষাংশ জুড়ে রয়েছে কিভাবে খুনি কে ধরা যাবে। উহু, এর মধ্যে আর মাথা খাটানোর খোরাক নেই, নেই , নেই। কাহিনী তার মত গড়িয়ে গেল, আর একটু অদ্ভুত ভাবেই কিলার ধরা পড়ল।
ইতিহাস ভূগোল যেটাই ঘাটুক, কিলার এর কিলিং সাইকোলজির মধ্যে যুক্তিগত ভাবে অভাব রয়েছে থিওরি অনুযায়ী।
আরও কিছু জায়গায় টেনে টেনে মিলিয়ে দেওয়া হয়েছে, যেটা আমার মতে লজিক দিয়ে করলে আরও ভালো দাড় করানো যেত।


সর্বশেষ কথা, ফিল্ম ক্রিটিক বেসিক্যালি নিজের ভাবনার বক্তব্য ব্যাখা করে। নিজের অপিনিয়ন দেয় জনসমক্ষে। কেও লিখে কেও আবার ভিডিও বানিয়ে। পাঠকরা নিজেদের ভাবনার মাধ্যমে বুঝতে পারবে, কোন সিনেমা দেখা উচিৎ, কোনটা নয়। এটাও সেই ধরনের সিনেমা, তবে ওয়ান টাইম ওয়াচ অবশ্যই।
হালফিলের দুর্বল গল্প, তার থেকেও বেশি দুর্বল অভিনয়, তার থেকেও বেশি দুর্বল কাস্টিং এর থেকে এই সিনেমা অনেক ভালো।

আমি রেটিং কম দিলাম, কেস খাবো না তো ?
যদি থাকি এই জগতে, দেখা হবে আবার পরের রিভিউ তে।  



 
#Chup!
#BengaliReview
#SamiranSamanta
©SamiranSamanta