পাঠপ্রতিক্রিয়া - সাদা বিড়াল

 পুস্তক পরিচয় 

=============
#রিভিউ
#পাঠপ্রতিক্রিয়া
©সমীরণ
=============
      সাদা বিড়াল
=============

->লেখকহিমাদ্রিকিশোর দাশগুপ্ত
->
প্রকাশকপত্রভারতী
->
প্রকাশকালজানুয়ারি , ২০২২
->
২৯৯/- টাকা

==============

আর একটি নতুন গল্পের বইয়ের পাঠ প্রতিক্রিয়া নিয়ে চলে এসেছি। বইয়ের নাম সাধারন, সঙ্গে দারুন একটা কভার পেজ। প্রথম দেখেই যেকোনো ভাবেই হোক, চমক লাগাটা স্বাভাবিক।



হিমাদ্রি বাবুর বই আমি এর আগে বেশ অনেক গুলোই পড়েছি। ভাললাগার তালিকায় উনি ছিলেন। তাই সেদিক থেকে দেখতে গেলে এই বই কেনাটা আমার অধিকারের মধ্যেই পড়ে।
ভয়, অপ্রাকৃত ঘটনা, অন্ধকারের নতুন আলোকপথ সমস্ত কিছু মিলিয়ে মিশিয়ে ছয়টি গল্প উপহার দিয়েছেন লেখক। চারটি তার মধ্যে গল্প, আর বাকি দুটি উপন্যাস, তবে আকারে অনেকটাই ছোট।
প্রতি গল্পের মধ্যে লেখার সাবলীলতা বিশেষ ভাবে গ্রহনযোগ্য। গল্পের কথকের ভুমিকায় যেই থাক না কেন, পাঠক কে সময়ের ফেরে যেখানে সেখানে নিয়ে চলে যেতে সক্ষম, এমনকি ভয়ের আঁধারে ডুবিয়ে দিতেও পারে।

হিমাদ্রি বাবুর সাথে আমি পরিচিত হই, ওনার লেখা “ মানুষ কুমীর “ এর মধ্যে দিয়ে, আনন্দমেলা পূজাবার্ষিকী থেকে। সেই শুরু,আর একে একে ওনার বই কেনা ও পড়া। দুঃসাহসিক অভিযান হোক বা অজানা জিনিষের খোঁজ, বেশ লাগতো পড়তে।
কিন্তু আপাতত এবার একটা ব্রেক নিতে হবে,তেমনটাই ধারনা আমার। যে আশা নিয়ে এই বইটি আমি নিয়েছিলাম, তার খুব কম অংশই পেয়েছি। হতাশ হয়েছি এটা বলবো না, তবে লেখা পড়ে যে আমি চমকে যাবো, ঠিক আগের মত, সেটা হয়নি। প্রায় প্রতিটা গল্পই অবশ্যই ভালো, সেটা নিয়ে কোন কথা নেই।
কিন্তু আমার ব্যাক্তিগত ভাবে আমি আর সেই মানের স্বাদ পাইনি। রহস্যের সাথে সাথে ওনার লেখার মধ্যে তথ্য পাওয়া যেত, এবারে সেটা বেশিরভাগ জায়গায় অনুপস্থিত।
একটা জায়গায় একই শব্দের বারংবার উপস্থিতি না দিলেই ভালো হতো ( ১৪৮ পেজ এ “ ব্রাশ “ শব্দ )। ১১১, ১২৬, ১৪৫, ১৮২ পেজ এর কিছু বানান ভুল চোখে পড়েছে, আশা করি পরবর্তী সংস্করণে সেটা ঠিক হয়ে যাবে।

লেখাগুলো এমনই জোরালো হতো, গল্পের শেষে একটা রেশ থেকে যেত। গল্পের চমক তো পরে আসছে। এবারে সেটা তেমন ভাবে পেলাম না। সত্যি কথা বলতে, আগে থেকে মোটামুটি বোঝাই যায়, এই গল্পের পরিনতি কি হতে পারে, অথবা টুইস্টটা কোন দিক থেকে টার্ন নেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই হুরমুরিয়ে গল্পগুলো গিলে হজম করে ফেলেছি একেবারেই।
“ রক্তাক্ত ফরমান “ গল্পটি কিন্তু বেশ ভালো লেগেছে। কভার পেজ এর “ সাদা বিড়াল “ সেই অর্থে তেমন কিছু নয়, তবে ভাবনাচিন্তার প্রখরতা একটু দেখা গেছে, কিন্তু এক্ষেত্রেও আসল জায়গা গুলো আগে থেকেই ধরে নেওয়া যায়। বইয়ের নামকরনটা সেই অর্থে অন্য কিছু দিলেও চলতো। টাইটেল এর গল্প গুলোই তো বেস্ট হয়। এক্ষেত্রে সেটা তেমন লাগল না। এর থেকে “ রক্তাক্ত ফরমান “ ভালই জমত। কভার পেজ বেড়ালের সাথে যে নগ্ন একটি ছবি রয়েছে, সেটা না থাকলেই হয়তো ভালো লাগতো, কারন গল্পের মধ্যে তেমন ছাপ নেই। শুধুমাত্র দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য হলে সেটা আলাদা বিষয়।


এবারে আসি আসল কথায়।
আমি কোন রকম নেগেটিভ রিভিউ করছি না। তবে আমার মনে হয়, গল্পগুলো ২৬-২৭বছর বয়সী পাঠক পাঠিকারা বেশি উপভোগ করবে। আমার ক্ষেত্রে হয়তো এক্সপেকটেশনটা একটু বেশি হয়ে গেছে। ওনার লেখার গতিধারা মারাত্মক। মুহূর্তেই উথাল পাথাল করে দেওয়ার শব্দ গুলো এখানে সেই ভাবে না পেয়ে একটু মন খারাপ হয়েছে বইকি।

আসবো আবার পরের রিভিউ নিয়ে, ততদিনে ভালো থেকো সব্বাই।

 #সমীরণসামন্ত
#সাদাবিড়াল

#হিমাদ্রিকিশোরদাশগুপ্ত
#বইমেলা২০২২
#পত্রভারতী

#রিভিউ
#পাঠপ্রতিক্রিয়া



  


 

Comments