পুস্তক পরিচয়
#রিভিউ
#পাঠপ্রতিক্রিয়া
©সমীরণ
///// দেবীরাক্ষস
->লেখক
– সৌরভ চক্রবর্তী
->প্রকাশক – বেঙ্গল
ট্রয়কা পাবলিকেশন
->প্রকাশকাল – ফেব্রুয়ারি
, ২০২২
->২৯৯/- টাকা
বইমেলার শেষ দিন,
শেষ স্টল ভ্রমন।
বইটা
চোখে পড়া মাত্র মনে হয়েছিল, এটা আমার চাই। চটপট করে বইটা খুলে লেখকের কলমটা চোখে
রেখে সেকেন্ডের মধ্যেই স্থির করলাম, ওটা নিজের ঝুলিতে ফেলতেই হবে। পকেট এর শেষ খুচরো গুলোই সম্বল এবার।
শেষ দিনের শেষ কালেকশন এটা, তবে পড়ার রাঙ্কিং একটু এগিয়ে এসেছে, তার জন্য দায়ী এই
বইএর ভয়ংকর সুন্দর কভার পেজ।
বইয়ের পেছনে একটা সুন্দর কথা লেখা, “ দুর্বল চিত্তের পাঠক, নিজ দায়িত্তে পড়বেন “
নেহাত খুব একটা ভুল লেখা নেই, তবে সেটা প্রথম চারটি গল্পের ক্ষেত্রে। বাকি তিনটি
গল্প, হুম চলে যাবে।
এর আগে লেখকের বেশ কয়েকটি বই জনপ্রিয় হয়েছে। তবে আমার কাছে এই বই টি
প্রথম। আসলে একটু চেখে দেখতে চাইছিলাম, গা কাঁটা দেওয়ার অন্য স্বাদটি।
হুম, কাহিনী গুলোতে কিছু একটা আছে।
ভয় শব্দটাকে নিয়ে ঘাটতে ঘাটতে, অনেক গল্পের বই তো পড়লাম। মোটামুটি অনেক ক্ষেত্রেই ভয়টা বস্তু, ব্যাক্তি অথবা স্থান কেন্দ্রিক। এই বইয়ের ক্ষেত্রেও প্রসঙ্গটা সেই চাদরেই ঢেকে রয়েছে। কিন্তু প্রতিবার চাদরের রং পালটেছে, কখনও বা লাল রঙের মৃত্যু, অথবা নীল আকাশে তন্ত্রের ছাই।
গল্প লেখার ধরন যথেষ্ট নতুনত্ব বহন করে।
আমি পড়তে শুরু করলাম।
কোন গল্পের প্রথম পাতা অথবা কোন গল্পের চার লাইন পড়া হয়েছে। অনুভব করলাম, এমন একটা দমবন্ধ করা আবহাওয়া ও কৌতূহল যে না শেষ করে ওঠার উপায় নেই বইকি। যেমন সাবলীল ভাষা, তেমনই ভয়ঙ্কর মুহূর্তের জীবন্ত ও সুন্দর কল্পনাতীত বিবরন।
প্রেক্ষাপট যেটাই হোক না কেন, বর্তমানের ঘটনা থেকে শুরু আর যখন তখন অতীতের কালো ছায়া, চোখের সামনে ফুটিয়ে তুলে লেখক তার হাতের জাদুর সাথে পরিচয় করাতে সক্ষম। ঘটনার অতীত বর্তমান মিলে মিশে ভয়ানক কিছু স্পর্শ উসকে দিয়ে চলে যায়।
“দেবীরাক্ষস” গল্পটি এই বইয়ের সবথেকে বড় গল্প, যেটা আমার দারুন লেগেছে। দেবী অথচ রাক্ষস, চিন্তা শক্তি প্রখর।
কিন্তু এই বইয়ের সব থেকে পছন্দের গল্প হোল “ চুল “।
“ কফিন বন্দি কাঠ “ গল্পটি খুব একটা ভাললাগেনি। আসলে রিয়েলিটি থেকে অনেকটা দূরে গিয়ে লেখা গল্পটির বুনন তেমন জোরালো নয়। ইংরেজি সাহিত্যের ঘরানায় সামঞ্জস্যে মাঝে মধ্যে চিড় ধরেছে।
মোটের ওপর এই সাতকাহনটি একটি কালেকশন এ রাখা যেতে পারে। বর্তমান সময়ের কথা মনে করলে, এখন পাঠক এর স্বাদ যেমন পরিবর্তিত হয়েছে, তেমনই তাদের জন্য এসেছে আজকের সময়ের কিছু লেখক লেখিকারা। সময়ের সাথে মানিয়ে তারা ভয় কে আর পোড়ো মন্দিরে বা অভিশপ্ত হোটেল এ আটকে রাখেনি।
লেখক সৌরভ চক্রবর্তী খুব সতর্কতার সাথেই সেই ব্যাপারগুলো মাথায় রেখেছেন। এই ব্যাপারটা আমার কাছে বেশ লেগেছে।
কোন গল্পের থিম আমি রিভিল করছি না। পাঠক বা পাঠিকা বইয়ের গন্ধ থেকে শুরু করে ভয় কে সামনে থেকে চাখুক ১০০ ভাগ, এটাই আমার উদ্দেশ্য।
প্রুফ রিডিং ( ১২৭, ১৩১ পাতা ) এর ক্ষেত্রে আরও একটু নিখুঁত ভাবে দেখবে আশা করি পরবর্তী প্রিন্ট এর সময়।
(একটি গল্পের মধ্যে কিন্তু চন্দ্রহাস এর উল্লেখ রয়েছে, যদিও সেটা বলা বারন।
চন্দ্রহাস এর দ্বিতীয় পার্ট বেড়িয়ে গিয়েছে দেখলাম। অথচ প্রথম পার্টটাই পড়লাম না। পকেটটা একটু জমুক, তারপর ভেবে দেখবো। )
#সমীরণসামন্ত
#দেবীরাক্ষস
#সৌরভচক্রবর্তী
#বইমেলা২০২২
#বেঙ্গলট্রয়কাপাবলিকেশন
#রিভিউ
#পাঠপ্রতিক্রিয়া
Comments
Post a Comment