🆁🅴🆅🅸🅴🆆 THE ROPE CURSE ১ ২

                           🆁🅴🆅🅸🅴🆆

                          
THE ROPE CURSE
সাল - 2018
প্লট – ভয়
আই এম ডি বি রেটিং – ৫.১ / ১০
নিজস্ব রেটিং – ৫ / ১০

THE ROPE CURSE 2
সাল - 2020
প্লট – ভয়
আই এম ডি বি রেটিং – ৪.৭ / ১০
নিজস্ব রেটিং – ৫.৫ / ১০
( // নেটফ্লিক্স এ শুধু দ্বিতীয় পার্ট রয়েছে )

একদমই ঠিক, আজ দুটো সিনেমার রিভিউ করতে চলেছি। অনেক দিন পর এমনটা করার কারন, সিনেমা দুটো একই গোত্র ধরে এগিয়েছে। ফ্লেভার অবশ্যই আলাদা এবং বেশ অন্যরকম, আর আমি মূলত ভিন্ন স্বাদ পেতেই পছন্দ করি।

প্রথমেই বলে রাখি, দুটো সিনেমার মধ্যে কোন কানেকশন সেই অর্থে নেই। মানে, যদি কেও ২ দেখতে চায় জাম্প করে, উহু কোন অসুবিধে হবে না বুঝতে। তবে কিছু ক্যারেক্টার এখানে প্রথম পার্ট থেকেই আসবে, যেটা তারা ধরতে পারবে না। প্রথম সিনেমার শেষ দৃশ্য, দ্বিতীয় সিনেমার শুরু, এটাও তাদের ধরতে পারার কথা নয়।
তো যেটাই হোক, আমি গল্প গুলো নিজের মত করে একটু বলার চেষ্টা করছি।

সিনেমার নাম দেখে এটা স্পষ্ট, এক প্রকার অভিশাপ, সেটা দড়ির সাথে রিলেটেড। দুটো সিনেমাতেই সেই ব্যাপার দেখানো হয়েছে।

প্রথম গল্প -
চিনের কোসটাল অংশ, নাম ফুজিয়ান। প্রচলিত কথা অনুসারে, কোন মানুষ যদি গলায় দড়ি দিয়ে সুইসাইড করে, তাহলে একটি অভিশাপের জন্ম হয়। সময়ের সাথে সাথে সেই অভিশাপের নেগেটিভ শক্তি আরও শক্তিশালী হয়।
অভিশাপটি নষ্ট করতে হলে, এক প্রকার পূজা পরিকল্পনা অর্থাৎ রিচুআলস করতে হয়, সেই দড়িটা পোড়ানোর জন্য। স্থানীয় ভাষায় সেটাকেই বলা হয়, “ রোপ রিচুআলস “।
সেই রাতে শহরের সব্বাই ঘরে ঢুকে যায় খুব তাড়াতাড়ি। রাস্তা দিয়ে হেটে যায় মাস্টার ( যিনি এই রিচুআলস টি করছেন ), সঙ্গে কিছু লোক, যারা সেই দড়ি টাকে বয়ে বয়ে নিয়ে আসছে, যথেষ্ট নিরাপত্তা ও নিয়ম মেনে। এই সময়ে কোন রকম বাধা পড়া, অথবা অন্য কারোর উপস্থিতি কাম্য নয় একেবারেই।
একটি ছেলে চায়, রিচুআলস টির লাইভ ব্রডকাস্টিং করতে। সেট আপ নিয়ে সঙ্গে নিজের পার্টনার এর সাথে পৌঁছে তো যায়। তারপর ?

দ্বিতীয় গল্প -
হঠাৎ করেই ড্রাগ সাপ্লায়ারস দের মধ্যে মড়ক লেগে গেছে। তাদের মধ্যে কিছু জন গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করছে। প্রচলিত কথা অনুসারে একটি শয়তান এর বর্ণনা রয়েছে, যার চোখ লাল টকটকে, আর দাত গুলো ক্যানাইন এর মত। এই সমস্ত কিছুর পেছনে এই শয়তানের হাত রয়েছে।
এটা কিছুটা চেইন এর মত। যে কোন ভাবে হোক, একটি মৃত্যু যদি ঘটে যায়, বাকি গুলো ঘটা খুব সহজ।
একটি মেয়ের সাথে পরিচয় ঘটে যে, একটি মাধ্যমের মত কাজ করে, অর্থাৎ ওপারের অশরীরীর সাথে খুব সহজে কন্টাক্ট করতে পারে।



সিনেমার প্রেক্ষাপট আমি এখানেই শেষ করছি।
দুটো সিনেমা নিয়ে এই মুহূর্তে অনেক পাঠক বন্ধুদের অনেকরকম ভাবনা চিন্তা মাথায় আসবে। তাদের জন্য বলবো, আমি কিন্তু ট্রেলার দেখিয়েছি।
তবে সিনেমা দেখতে বসার আগে কিছু কথা।
খুব যে আহামরি ব্যাপার রয়েছে, উহু মোটেও না। না দেখলে যে খুব ভুল হয়ে যাবে, উহু তাও না। ভয়ের দৃশ্য তো রয়েছে অবশ্যই, তবে সেই মাত্রায় নেই। নৃশংস ও রক্তাক্ত কিছু সিন রয়েছে, তবে জাম্প স্কেয়ারি যাদের পছন্দ, তারা এটা পছন্দ নাও করতে পারে, কারন সেই লেভেলে এখানে তেমন কিছু অনুপস্থিত। গল্পের জোর সেই অর্থে অতটাও জাঁকালো নয়।
এতো কিছু নেগেটিভ কমেন্ট করে ফেললাম, তাহলে সিনেমাটি দেখবে কেন ?

গোঁড়া থেকে বলছি তাহলে।
ভয়ের সিনেমা হলেও একটা বেশ সুন্দর গল্প বলার ধরন রয়েছে, অরথায় পরিবেশন। যেই গল্প অভিশাপ আর ভালবাসার মধ্যে যোগসূত্র রচনা করবে।
একটা ফ্রেস সিনেমাটোগ্রাফি দেখা যাবে এর মাধ্যমে। ভয়ের পরিবেশ সেই অর্থে অনেকটাই কমন,কিন্তু রিচুয়ালস টা ?  সেই প্রসেসটা বেশ সুন্দর ভাবেই দেখানোর চেষ্টা করেছে, বারে বারে।
ফাউন্দ ফুটেজ ফিল্ম এর মত কিছু জায়গায় বেশ হৃদকম্প হবে এটাই স্বাভাবিক।
স্পয়লার দিছি, কারন আমার এই ব্যাপারটা খুব মনে ধরেছে, আর সেটা শেয়ার করছি।
সালমান খানের বডিগার্ড মনে পড়ে ?
না না, এটার কপি না। ঐ ফিল্মে শেষে একটা টুইস্ট আছে না ? প্রথম পার্টেও তেমনি একটা ব্যাপার আছে।  

দ্বিতীয় পার্টটি আমার বেশি ভালো লেগেছে। কারন হিসেবে অবশ্যই গল্পের মধ্যেকার ভাবনাটাই দায়ী। তাছাড়া অভিনয়ের লেভেল, কতটা নিখুঁত হতে পারে ?

আমাদের ইন্ডাস্ট্রি তে কি হয় বলবো ?
হিরো অথবা হিরোইন কে যতটা পারা যায় সুন্দর অথবা চিকনা বা চিকনি রাখা হয়, যাতে অভিনয় যাই হোক, ওদের মুখটা যেন ক্যামেরায় ভালো আসে। সুন্দরা বা সুন্দরী ব্যাপারটা যেন বজায় থাকে ( কিছু ব্যাতিক্রম বাদে )
কিন্তু বাইরের ফিল্ম এতোটা ন্যাচারাল লাগে কারন, ওরা মেকআপ সেই লেভেলে করে ( আদেও করে কিনা জানিনা ), যেটা দেখলে আর যাইহোক ধুম তানা না না মেকআপ মনে হয় না। তাতে যদি কাঁদার দৃশ্য থাকলে চোখ বা নাক দিয়ে জল গড়াক, ক্যামেরায় রিয়েলিটি টাই ছোঁয়া থাকবে, যেটা দর্শক এর মনে ধরতে বাধ্য।
( আমাদের এখানে হলে, আগেই কাট। নাকের জল বেড়িয়ে মেক আপটা বিগড়ে গেল, যাহ। উহু, আবার শুরু থেকে মেকাপ করো, রি-শুট হবে )
হয়তো এটাই পার্থক্য ওদের সাথে আমাদের।
সেই জন্য একটা অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে সঙ্গে ৮ টা নমিনেশন। শেষের দিকার একটা দৃশ্য বেশ গায়ে কাটা দিয়েছিল, সঙ্গে মন ভার করা দুঃখ।


সিনেমা দুটোই এক প্রায় ১০০ মিনিট এর। গল্পের ধারা গতি কখনও স্লো, কখনও বেগ প্রধান। কোথাও কিন্তু সেই অর্থে বাদ দেওয়ার জায়গা নেই। কারন কন্টেন্ট মাঝে সাঝে বেশ ভালো ইনফো দিয়েছে, অল্পের মধ্যে। মোটের ওপর একটা কথা, দেখতে পারো, না দেখলেও ক্ষতি নেই। পরের রিভিউ এর জন্য একটু অপেক্ষা করতে পারো, এই আর কি।
ভালো থেকো সব্বাই।