সাল - ২০১৯
প্লট – অশরীরী
অডিও – মালয় ভাষা
দেশ - মালয়েশিয়া
আই এম ডি বি রেটিং – ৬.১ / ১০
নিজস্ব রেটিং – ৬.৬ / ১০
প্ল্যাটফর্ম - নেটফ্লিক্স
“ আমি তোমার থেকে শ্রেষ্ঠ। আমি তোমার থেকে অনেক শক্তিশালী।
তুমি আমাকে বানিয়েছ আগুন দিয়ে, কিন্তু ওদের ( মানুষ ) কে বানিয়েছ মাটি দিয়ে। আমি বারবার ফিরে আসবো। “
এই উক্তিটি ডেভিল এর, অবশ্যই ভগবান কে লক্ষ্য করে।
সিনেমার শুরুতে কিছু লাইন ভেসে আসে স্ক্রিনে, যার বঙ্গানুবাদ মোটামুটি এরকমই।
শুরুতেই এমন একটা কমেন্ট, ধাক্কা খেয়েছি বটে। বইটা শুরু হোল,আর আমি ভাবতে বসলাম, সিনেমাটা কি একজন মানুষের দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখবো নাকি একজন ডেভিল ( শয়তানের )।
ভূতের বই বলতে যেটা বুঝি, এটা সেরকমই তবে তফাৎটা অনেক ভাবেই।
ভয় আছে, অবশ্যই আছে কিছু দৃশ্যপট। হাড়হিম করা ভয়ের নয়, তার থেকেও একটু বেশি, হাড়ে মজ্জায়।
জাম্প স্কেয়ারি ব্যাতিত, আচমকা কিছু ঘটে যায়, যেটা বেশ অদ্ভুত।
ছোট্ট একটি গ্রাম।
থাকে মা আর দুই সন্তান। সেদিন বাইরে থেকে অতিথির মত আসবে একটি ছোট্ট মেয়ে। খাওয়া দাওয়া নেই, রুক্ষসূক্ষ্ম অবস্থা। মায়া লাগবে। রাতে খেতে দেবে এরা। জিজ্ঞেস করবে তার নাম, অথচ কিছু বলবে না। খুব আদর ও যত্নের সাথে খাওয়ারটা শেষ করবে। মেয়েটি কথা বলছে না কেন, বোবা নাকি ?
কিন্তু ঠিক তারপরের দিন, পালটে যাবে সব কিছু। ঘুম থেকে তিনজন উঠে দেখবে নৃশংস দৃশ্য। ছেলেটি তো দেখেই চমকে উঠবে…
কি ঘটেছিল… ? অতিথি মেয়েটি কথা বলবে অবশ্যই, কিন্তু কি বলবে ? সঙ্গে কি এমন কাজ করবে, যার পর থেকে ছোট্ট সংসারে আছড়ে পড়বে অযাচিত কালো ছায়া।
গল্পে আর মাত্র দুটি ক্যারেক্টার যোগ হবে। মোট ৬জন মিলে স্ক্রিন প্লে, তাতেই জমজমাট। বাকি তেমন কিছু আমি বলছি না, তাতে ভয়ের স্বাদ নিঃসন্দেহে নষ্ট হবে।
সন্দেহের তীর কখনও যাবে এদিকে, কখনও বা ওদিকে। টানটান সাসপেন্স এর থেকেও একটা লেভেল ওপর দিয়ে এই গল্প, চমৎকার ভাবে বেড়িয়ে আসবে ছোট্ট ফিল্মটির মাধ্যমে।
অভিনয়ের সাবলীলতা ভালো ভালো অ্যাক্ট কেও মার কাহিয়ে দেবে।
কালোজাদু অথবা কুসংস্কার, শব্দ দুটো পরিচিত বটেই অনেকে। এখানে সেটা রয়েছে, কমবেশি নতুনত্তের সাথে, তবে একটু নৃশংস।
আমার সব থেকে ভালো লেগেছে, লোকেশন। এমন একটা ভয় ধরানো ভাব রয়েছে সেই জায়গাটার মধ্যে, কি বলবো আর। এমনি যদি ক্যামেরা নিয়ে একটু এদিক করা হয়, ভয়ের ফুটেজ তৈরি করতে বিশেষ বেগ পেতে হবে না। তার ওপর প্রপার অ্যাঙ্গেল অফ ভিউ দিয়ে কখনও জঙ্গলের গাছালী পথ, কখনও মরা প্রানির ওপর থেকে, কখনও রাতের আলোতে পাথরের ওপর ছায়া, এ এক অন্য ব্যাপার। শুধু ফিল্ম না, মিক্সাপ প্রকারের অনুভূতি।
এক ঘণ্টা কুড়ি মিনিটের এই কিসসা, ঘুড়িয়ে পেঁচিয়ে নয়, একদম ওপেন ট্রিটমেন্ট এ এগিয়েছে, যেখানে শেষে যাওয়ার আগেই হোঁচট খেতে পারে দর্শক বন্ধুরা। তবে অবশ্য ফিল্মের অনুভূতিটা যদি সঠিক ফ্লেভারে নেওয়া সম্ভব হয় তখনই।
নিঃশব্দ একটা রেশ, রেখে যাবে শেষটা। সঙ্গে থাকবে আবার নতুন বিপদের অশুভ সঙ্কেত।
আমার কিন্তু বেশ দারুন লেগেছে। এই রকম ধরনের সিনেমা আমাদের কাছে নিত্য নতুন এক্সপিরিয়েন্স এর খোরাক যোগায়।
গা ছমছমে পরিবেশ, ব্যাপক লেভেলে অভিনয় আর সর্বোপরি ফটোগ্রাফি মাপের ভিডিও কম্পোজিশন, দারুন সৃষ্টি। শেষমেশ একটা কথা, হঠাৎ কোন নৃশংস জিনিষ দেখার জন্য তৈরি থেকো, পরিমানে অল্প, এফেক্ট কিন্তু বেশ সাঙ্ঘাতিক।
Comments
Post a Comment