░P░o░s░t░ ░M░o░r░t░e░m░ - 🆁🅴🆅🅸🅴🆆

#postmortem
#review
#filmReview
#SamiranSamanta
#PostMortem2020

 সাল - ২০২০
প্লট – হরর, ভয়, রহস্য
অডিও – হাঙ্গেরিয়ান
দেশ - হাঙ্গেরি
আই এম ডি বি রেটিং –  ৫.৮ / ১০
নিজস্ব রেটিং –   ৬.৫ / ১০
প্ল্যাটফর্ম -  N̶e̶t̶f̶l̶i̶x̶,̶ ̶A̶m̶a̶z̶o̶n̶ ̶P̶r̶i̶m̶e̶

নামে কি আসে যায়, কাজই ধর্ম। সে জন্য তো কানা ছেলের নামও হয় পদ্মলোচন। হঠাৎ এমন বাক্যব্যয় করছে কেন এই ছেলেটা ?
আসলে আমি এটাই বলতে চাই, সিনেমার নাম দেখে আবার ভেবে বস না, পোস্টমরটেম দেখানো হবে। নাম যাই হোক, আসল গল্প যেন কাজে থাকে। বুক কভার দেখে বইয়ের কন্টেন্ট যাচাই এর ভুল কম বেশি অনেকেই করে, সে জন্যই রিভিউটি খুব সতর্কতার সাথে পড়তে বলছি।

“ মরটেম “ – শব্দটি মূলত “পোস্ট“ এর পড়েই ব্যবহার হতে দেখেছি। পুরো শব্দের মানে, এমন কোন কাজ যা মৃত্যুর পরে করা হয়।

থমাস নামের একটি ছেলে, একটা দারুন ভালো কাজ করছে। মূলত সেবামুলক, তাতে তার স্বল্প আয়ও হয়। মৃত্যুর পর শেষকৃত্য সম্পন্নের আগে একটা স্মৃতি রাখার দরকার।
তাই সেই প্রানহীন দেহের সাথে ফ্যামিলির সবার ছবি তুলে দেয়, শেষ ছবি। ব্যাস এটাই। দেহটি এমনভাবে বসানো হয়, যাতে দেখে মনে হয় ঘুমিয়ে আছে অথবা অন্যমনস্ক অথবা মোটামুটি নর্মাল।
এমন ভাবেই হঠাৎ পরিচয় ঘটে একটি ছোট্ট মেয়ের সাথে, নাম অ্যানা, বয়স ১০ বছরের কাছাকাছি।
সে থমাসের কাছে একটা সাহায্য চায়। তার গ্রামে অনেক গুলো মড়া রয়েছে। এমন করে সব্বার যদি সে স্মৃতি রাখতে পারে, তাহলে গ্রামবাসীরা খুব উপকৃত হবে।
হাঙ্গেরিয়ান এই গ্রামটিতে আসলেই মানুষের থেকে মড়ার সংখ্যা বেশি।

অর্থ উপার্জনের জন্য থমাস এই পন্থাটাই বেছে নিলেন কেন, তার কারন তেমন একটা স্পষ্ট নয়, তবে থমাসের একটা ছোট্ট ইতিহাস রয়েছে।
সে আসলে মৃত্যুর মুখ থেকে বেচে এসেছে, একবার। সোজা ভাষায় মৃত্যুর পর আবার ফিরে এসেছে, দেহে প্রান নিয়ে।
সিনেমার সমগ্র প্রেক্ষাপট প্রথম বিশ্বযুদ্ধ এর শেষ লগ্নে, থমাস সেখানে একজন জার্মান সৈনিক ছিলেন। যুদ্ধে আহত ও নিহত বলে, এক গাদা মৃত সৈনিকের সাথে থমাস কে ফেলে রাখা হয়। একজন বয়স্ক ওনাকে দেখেন, দেহে প্রান আছে তখনও।

তারপর সেই চলে আসা লড়াই থেকে।
 
অ্যানা এর সাথে তার গ্রামে আসে থমাস, তারপর ?
এমন কিছু ঘটতে দেখে, যাওয়া মাত্রই, উহু । এত দিনের কাজে এই প্রথম।
এর পরের অংশ সম্পূর্ণটাই ছেড়ে রাখছি দর্শকদের জন্য।


ভয় দেখানোর অনেক পন্থা। স্বাভাবিক কোন চেহারা কে আঁকড়ে ধরে অথবা শূন্যে কিছু অযাচিত বস্তু ভাসিয়ে। কিন্তু যার চেহারা নেই, তাকে দিয়ে ভয় পাওয়ানো যায় কি করে।  ফিল্মে ভয়ের সংমিশ্রণ খুব যত্নসহকারে পাওয়া যাবে।
স্বাদ বদল হতে বাধ্য, কারন স্ক্রিন প্লে নতুনত্তের সন্ধান দেবে। ভাবনা পুরানো হলেও পন্থা কিন্তু নতুন, নিঃসন্দেহে আবারও বলছি। শরীরী আকার না থাকলে সেটা যে আরও বেশি ভয়ঙ্কর লাগে।
ইন্টারেস্টিং ব্যাপার হোল, অশরীরী ভয়ানক সব ব্যাপারগুলো ঘটছে সকাল বেলায়, সূর্য তখন মাথার ওপরে। আর হ্যাঁ, সবার সামনে, প্রকাশ্যে।
না, মন্দ মোটেও লাগল না। গল্পের বুনন বেশ ভালই। এক ঘণ্টা ৫৫ মিনিট এ সমস্তটা শেষ করলেও, আমি আশা করেছিলাম সমস্ত কিছুর শেকড় অর্থাৎ আসল ব্যাপারটা খোলসা করবে, সেদিন থেকে আমি নাম্বার কাটতে বাধ্য হলাম। এছাড়া শেষের দিকের ভৌতিক ব্যাপার গুলো বারে বারে রিপিট হয়েছে, গল্পের জন্য। ভয়ের সিন থাকা সত্ত্বেও ব্যাপারটা কমজোরি ছিল, আরও ভালো কম্পোজিশন করা যেত। তবে সিনেমায় ইমোশন কে গুরুত্ত দিলেও তাতে সময় নষ্ট করা হয়নি, বরং আরও জাঁকালো করা হয়েছে।


                            

বেস্ট ইন্টারন্যাশনাল ফিচার ফিল্ম হিসেবে ৯৪তম অ্যাকাডেমি অ্যাওয়ার্ড হিসেবে পাঠানো হয়েছিল।   

শুরুতেই বললাম না ? আবারও বলছি।
আমার রিভিউটা কিন্তু জাস্ট একটা গল্পের মত। আসল তুরুপের তাস রয়েছে সিনেমার মধ্যে, নিঃসন্দেহে।   

শেষে একটা কথা।
সিনেমাটি কোথায় পাবে ? যখন যে প্লাটফর্ম লেখা থাকবে, সেখানেই খুজবে। তবে কাটা চিহ্নের সাথে লেখা এখানে রয়েছে,অর্থাৎ সেখানে পাওয়া যাবে না। তারমানে অন্যপথ। আমার পাঠক বন্ধুরা এটা জানে অবশ্যই। তাই এটা নিয়ে আর রাগ গোসা না করাই শ্রেয়।

আগামি বড়দিনের আগাম ভালবাসা, সব্বাই কে।
ভালো থেকো, সুস্থ থেকো, সঙ্গে থেকো।