সফরের নাম অন্ধ্রপ্রদেশ
======================
ষষ্ঠ তথা অন্তিম দিন -
©SamiranSamanta
#andhrapradeshtourism
#andhrapradesh
#tirupati
#pulicotlake
#sriharikota
#dutchcemetry
#pazhavekor
মন খারাপ করার কোন প্রশ্নই ওঠে না। সফরের শেষ দিনটাও প্রথম দিনের মত তাজা ও স্ফূর্তিপূর্ণ, কারন আজকের লিস্টে এমন সব জায়গা রয়েছে, যেটা খুব কম মানুষই পর্যটক হিসেবে এসে দেখেছে। নতুন জায়গা এক্সপ্লোর করার খিদে বরাবর তাড়িয়ে বেড়িয়েছে আমাকে, আজকের দিনটা তাই সব থেকে বেশি এক্সাইটেড।
স্নান করে সক্কাল সক্কাল তৈরি হয়ে গাড়িতে, “ গুড মর্নিং “।
আজ শেষ দিন দাদা, কিছু স্পেশাল হোক। কথা রেখেছিল ড্রাইভার দা।
“ চলুন দাদা, আজ ব্রেকফাস্ট একটা স্পেশাল জায়গায় নিয়ে যাই, খাওয়ার পর বলবেন কেমন লাগল। “
“ নিশ্চয়, সে আর বলতে। “
গাড়ি ঘুরল রেনিগুন্তার পথের দিকে। ঘণ্টাখানেক পরেই চলে এলাম খাওয়ার একটা দোকানে, রাস্তার পাশেই। কলকাতায় মনে পড়ে অফিস পাড়া ? রাস্তার একপাশে খাবারের দোকান সারি বেধে। অফিসের মানুষগুলো সময়ে নেমে নিচে, নিজের মত খেয়ে নেয়, কত্ত ভীর, তাই না ? এখানে অবশ্য ওটাই একটা দোকান। পাশের সরকারি অফিস যত আছে, সব এখানেই আসে খেতে। হুম, কিছু তো কারন আছে, নাকি ?
প্লেট হিসেবে খাবার। একটা প্লেট এ দুই পিস ধোসা, দুটো বড়া, দুটো ইডলি। আমরা নিলাম একটা একটা করে। স্বাদ এর কথা কিছু বলবো না। এই কদিনে যা খেয়েছি, সব ফেল। স্পেশাল ব্যাপারটা হোল, চাইলে এখানে মুরগির মাংস সমেত ঝোল দেওয়া হয়। আমার পাশে বসে থাকা একটি লোক, মাংসের ঝোল দিয়ে ইডলি মারছিল, কীভাবে আমি জানিনা। এরক্মতা ভাবনা চিন্তায় আসেনি কখনও। ভেজ নন মিশে একাকার। তবে এক প্লেট অর্ডার দিয়েই ফেলেছিলাম টেস্ট করার লোভে। এত সক্কাল সক্কাল কখনোই এমন খাবার খাইনি, কিন্তু আজ খেলাম। আর ফিদা হয়ে গেলাম। অপূর্ব। ড্রাইভারদা সত্যি কথা রেখেছে যাত্রার শুরুতে ।
এবড়ো খেবড়ো রাস্তা পেড়িয়ে চলেছি আমরা। সামনে কখনোই ধু ধু জমি চারিপাশে, কখনও লাল মাটির ধুলো। রাস্তার মাঝে কোথাও শুধু ডাব ওয়ালা দাড়িয়ে এক কোনে। বুঝতে পারছি, যতই এগোই, ততই জনমানবহীন হতে শুরু করেছে। কিছু সময়ের পর পুলিকট লেখা দেখলাম একটা জায়গা, সম্ভবত সরকারি দপ্তর।
পেড়িয়ে যাওয়ার পর, রাস্তা সোজা। অবাক করার বিষয়, লেক কই ?
ওরে বোকা, রাস্তার ডান পাশে, বাম পাশে ওটা কি তাহলে ?
ও হ্যাঁ তাই তো, আমরা পুলিকট লেকে অলরেডি চলে এসেছি, কিন্তু বুঝতে পারিনি। না বোঝারই কথা, কারন আমি মনে মনে আশা করেছিলাম, লেক বাধানো থাকবে, কোথাও আলাদা করে জায়গা থাকবে নামার জন্য, হয়তো বোটিং এর ব্যাবস্থা রয়েছে। আমার ভাবনায় জল ঢেলেছে, ভালো করেছে।
পুলিকট লেক, এমন একটা জায়গা যেটা প্রকৃতির সম্পূর্ণ ভালবাসায় তৈরি হয়েছে। চিলকার পর দ্বিতীয় বৃহত্তম লবনাক্ত এই হ্রদ অন্ধ্রপ্রদেশ ও তামিলনাড়ুর করমন্দল উপকূলে অবস্থিত। ৯৭% অংশ অন্ধ্রপ্রদেশ এর মধ্যে থেকে বাকি অংশ তামিলনাড়ুতে ( সেখানেও আজই যাবো একটু পরে )
ভারতের অন্যতম বার্ড স্যানচুয়ারি বলা হয় এই জায়গা কে। ১০০ প্রজাতির পাখী প্রায়ই এখানে দেখা যায়। তবে আমার চোখে পড়েছিল, গ্রেটার ফ্লেমিংগো পাখীর ঝাক। সে দৃশ্য দেখার মত। দূর দূর যেদিকে তাকাই না কেন জল আর জল, তবে তাতে প্রবাহ নেই। গভীরতা হাঁটুর বেশি নয়। তার ওপরই পাখী গুলো ব্যাস্ত। কেও কেও ভেসে যাচে, কেও বা জটলা পাকিয়ে রেলা দিছে। কেও বা জলে একবার দেখে আবার আকাশের দিকে তাকিয়ে ফেলল।
লেকে আলাদা করে কোথাও নামা জায়গা নেই। ঐ যে বললাম না, এটা পর্যটকদের জন্য নয়। এখানে যদি কেও সত্যি শুধু মাত্র আনন্দ খুজতে আসে, সেটা পেতে একটুও অসুবিধে হবে না। যেখানেই পাখী দেখছি, গাড়ি দাড় করিয়ে নেমে পড়ছি নিচে।
প্লাস্টিক বা আবর্জনা, কিছু নেই। সমস্তটাই প্রকৃতির দখলে। লেকের প্রান্ত বরাবর দেখলাম, যেটা অপ্রত্যাশিত ছিল। জলাশয়ের দূরের দিকে তাকালে আকাশ আর জল মিশে গেছে, স্পষ্ট দেখতে পাওয়া যায়। এখানে কিন্তু আমি একটুও বুঝতে পারিনি। মনে হছিল, এটাই কি শেষ। পৃথিবীর কি একদম ধারে এসে পড়েছি ? না, এমন ভাবনা এর আগে কখনোই আসেনি। বেলা ১২টা বাজে, সূর্য মাথার ওপরে, হয়তো সেজন্য চোখে ধাঁধা লেগে গেছিল।
অনেকটা রাস্তা আসতে আসতে এগোতে থাকলাম, সাথে প্রকৃতি কে উপভোগ করছিলাম। জনকোলাহল থেকে অনেকটা দূরে, পর্যটকদের ক্ষেত্রে যাওয়াটা একটু সমস্যাবহুল বলাই যায়। সেজন্যই হয়তো এখানে সমস্তটাই পরিস্কার, পরিছন্ন হয়ে রয়েছে। এমন একটা জায়গা আমি সিলেক্ট করলেও, এতোটা ভালো লাগিয়ে দেবে, আমার কল্পনার বাইরে।
রাস্তা বরাবর এগিয়ে গেলাম, সামনেই এমনটা একটা কিছু অপেক্ষা করছে আমাদের জন্য, ভারতের গর্ব, শ্রীহরিকোটা। নামটাই বোধয় যথেষ্ট সকল ভারতীয়র কাছে।
এই দ্বীপটি ব্যারিয়ার আইল্যান্ড হিসাবে অবস্থান করে পুলিকট কে বঙ্গোপসাগরের সাথে বিছিন্ন করেছে। ভারতের সতীশ ধবন মহাকাশ গবেষনাকেন্দ্র অবস্থিত। ভারতের মধ্যে দুটি উপগ্রহ উৎক্ষেপণ কেন্দ্র রয়েছে, তার মধ্যে শ্রীহরিকোটা একটি।
অবস্থান অনুযায়ী পৃথিবীর দ্বিতীয় সেরা মহাকাশবন্দর হিসেবে পরিচিত, প্রথম নম্বরে আমেরিকার কেনেডি স্পেস সেন্টার।
আসলেই এটা একটা বালিয়াড়ি দ্বীপ মাত্র। সমুদ্রতল থেকে মাত্র ১ মিটার উঁচুতে।
সব ভাল, তবে এই বিশেষ জায়গাটি একি সাথে বিপজ্জনক ও দুর্ঘটনা প্রবন। এমন স্থান জনগনের থেকে দূরে থাকা উচিত।
একটা দুঃখের কথা কই ?
কইবো ?
শ্রীহরিকোটা পৌঁছে গেলাম। সামনে বড় বড় তিনটে রকেট দাড় করানো, নিচে বড় বড় অক্ষরে নাম লেখা। কিন্তু এটুকুই। মেইন গেট থেকে নো এন্ট্রি। এত দূর থেকে এসেছি, বললাম ওনাদের। কোন কথা শুনল না। এর পরে আর যাওয়া যাবে না। ফিজিক্স নিয়ে ব্যাচেলর্সটা পাশ করেছি, এই জায়গার মাহাত্ম্য যে কি, আর পাঁচটা সাধারন পর্যটক এর থেকে একটু হলেও বেশি অনুভব করতে পারি। এটাও ভেবে দেখলাম, আমি তো সাধারন মানুষ, এমন জায়গায় কেনই বা ঢুকতে দেবে।
ওখানে কিছুক্ষণ সময় কাটিয়ে ছিলাম মাত্র।
তারপর আবার পাড়ি দিলাম, তামিলনাড়ুর দিকে, পুলিকটের বাকি ৩% যেখানে রয়ে গেছে।
রাস্তা এক ঘণ্টায় অনেকটা বেড়িয়ে এসেছি। তেষ্টা পেয়েছে, চা এর। আসলে অতো রোদে দুপুরে ড্রাইভ করতে করতে চোখে ঝিমুনি চলে আসে, সঠিক সময়ে চোখ কড়া করে নেওয়ার জন্য চা এর বিকল্প নেই।
চা খেতে গিয়ে বিপত্তি। চা ওয়ালা বলল, পুলিকট লেক তো আপনারা ছেড়ে চলে এসেছেন, অনেকটা। এইদিকে তো তেমন কিছু নেই।
ড্রাইভারদা প্রমাদ গুনছে আমার দিকে তাকিয়ে। আসলে এই মুহূর্তে যেখানে যাচি, এটা ফার্স্ট টাইম ওনার কাছেও, ঠিক ভরসা করতে পারছে না।
ডাচ সিমেট্রি নামটাও ওনার কাছে প্রথম। উনি সঠিক ভাবে জানেন না সিমেট্রি মানেটাই বা কি, ওখানে আমরা যাচি কি জন্য।
গুগুল লোকেশন অন করলাম, আর ওনাকে আশ্বস্ত করলাম, চলুন দাদা, আমরা ঠিক রাস্তায় আছি, একদম চিন্তা করবেন না। এখানে বলে রাখি, উনি কিন্তু গুগুল ম্যাপ ব্যবহার করতে জানলেও তেমন ওয়াকিবহাল নন, তাই এক্সট্রা ভরসা আমাকেই দিতে হয়েছে।
মেইন রোড ছেড়ে রাস্তা সবুজ গ্রামের মত জায়গায় ঢুকেছে। ট্রেন লাইন ক্রস করে আরও অন্যরকম লাগছে এই জায়গাটা। তারমানে আমরা তামিলনাড়ু ঢুকেই পড়েছি।
সংক্ষিপ্ত ইতিহাস বলে ফেলি তাহলে এটা নিয়ে।
১৫০২ সাল।
পর্তুগীজরা ভারতে আসে মুলত রেশম আর মশলার আমদানি রপ্তানি করতে। বিজয় নগরের রাজার অনুমতিতে পুলিকট এ ফ্যাক্টরি বানায়। একটা বন্দর পর্যন্ত বানায়, এবং সেটা ১৬০৯ পর্যন্ত রক্ষা করতে পেরেছিল। পরবর্তী সময়ে ডাচ আসে, লড়াই করে দখল করে নেয় এই অংশ। এর পর থেকে ডাচদের মেইন স্থল এটাই হয়ে যায়। এই সিমেট্রি তৈরি হয় ১৬৫৬ খ্রিষ্টাব্দে।
মোট ৭৭টি গ্রেভ রয়েছে, যাদের মধ্যে ৬২টি শনাক্ত করা গেছে। প্রতিটা গ্রেভ এ একটাই পাথরের পিস রয়েছে, ফুল, পাখী, মানুষের মুখ আঁকা, সঙ্গে ডাচ ভাষায় সেই মানুষটার সম্পর্কে কিছু লেখা। পাথর গুলো শুনলাম, হল্যান্ড থেকে আনা।
গুগুল জানান দিল আমরা এসে গেছি, আর ঠিক তখনই বাম দিকে দেখলাম, রোদের আড়ালে উঁকি দিয়েছে লম্বা স্তূপাকৃতি।
নেমে এগিয়ে গিয়ে মন খারাপ হয়ে গেল, বাইরে থেকে তো চাবি। আবার এখানেও গেল নাকি ? এমন ভাবতে ভাবতেই দেখলাম একজন লোক, মাঝ বয়সী দৌড়ে দৌড়ে এলেন আমার সামনে। আমাকে কিছু বলতে হোল না, উনি নিজে থেকেই দরজা খুলে দিলেন। ওনাকে শুধু বললাম, “ হিন্দি ? “
চট করে উনি সেখান থেকে বেড়িয়ে আর একজন কে নিয়ে এলেন আমাদের সামনে। দাদা গোছের বয়স হবে, ওনার কাছে সিমেট্রি সম্পর্কে কিছু শোনার জন্য রিকোয়েস্ট করলাম। নির্দ্বিধায় উনি আমাদের সাথে কথা বলতে বলতে এগিয়ে চললেন, ভালো লাগল এই ব্যাবহারটা।
কোনটা প্রথমে, কোনটা রাজার, কোনটা রানির, কোনটা ছোট ছেলের, সাল অনুযায়ী সেগুলো সেখানে রয়েছে। গা ছমছমে অনুভূতি কিন্তু ছিল না। তাই অলৌকিক কোন কথা এখানে বলতে যাবো না।
দুটো গ্রেভ একটু স্পেশাল। আন্ডারগ্রাউন্দ রাস্তা রয়েছে এর নিচ থেকে, আর একটা তার মধ্যে ৮ কিমি দূরে উঠেছে। সরকার থেকে সমস্তটাই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে অবশ্য। রানির গ্রেভটা বেশ বড়, সিমেট্রি এর মাঝে অবস্থিত।
“সিমেন্ট“ কোনোভাবেই সেই সময়ে ব্যবহার করা হয়নি,এই সকল কাজে। বেশ ইন্টারেস্টিং। সময়ে সময়ে ঘাস কাটার লোক তো রয়েছে, তবে খুব তাড়াতাড়ি এগুলো গজিয়ে ওঠে। বেশ অনেকটা সময় ওখানে থাকলাম। অন্য রকম শান্তি।
বেরোনোর সময় খেয়াল করলাম এমন একটা জিনিষ, যেটা ঢোকার সময় মিস করেছি। গেটটা বেশ সাঙ্ঘাতিক ভাবে তৈরি, আর্ক মত শেপ দিয়ে একটি কঙ্কালের মুখ, তার দুইপাশে কিছু লেখা রয়েছে। নিচে দুই পাশে দুটি প্রহরী দাড়িয়ে আছে, কঙ্কাল সার দেহ, উহু পুরোটাই বানানো, ঢালাই করা। দেখতে কিন্তু বেশ দারুন লাগছিল। এটা দেখে ঢুকলে হয়তো অনুভূতিটাই আরও আলাদা পেতাম।
ও হ্যাঁ, এখানের বংশধররা এখনও বছরে একটি নির্দিষ্ট দিনে একবার আসে, আগে থেকে তাদের জানিয়ে রাখে, তারা পরিস্কার পরিছন্ন করে।
জানিয়ে রাখি, চেন্নাই এয়ারপোর্ট থেকে ৬৯ কিমি দূরে এই সিমেট্রি অবস্থিত।
সামনে রয়েছে চার্চ। অনেক পুরানো সময়ের, দেখেই বোঝা যায়।
পায়ে হাঁটা পথ, যদিও একটু নোংরা।
চার্চের ডান দিক থেকে ঘুরে বাম দিকে এলাম। দেখে মনে হোল, মেইনটেইন তেমন ভাবে করা হয় না। অনেকটা উঁচুতে একটা বড় ঘণ্টা, লম্বা রসি ঝুলছে নিচ পর্যন্ত। ভেতরে জুতো ছেড়ে প্রবেস করতেই, এক প্রকার শব্দ কানে এলো।
কোন এক মহিলার গলা, গান করছেন অথবা কিছু একটা আবৃতি করছেন। শব্দটা প্রচণ্ড আস্তে, অথচ ক্ষীণ, ডাইরেক্ট কানে এসে আঘাত করছে। বেশ মিষ্টি সুরের গলা, চুপ করে দাড়িয়ে শুনছিলাম আমি।
এই চার্চের একটা ছোট্ট গল্প আছে, দেওয়ালে কোন এক জনের আঁকা দেখে বুঝলাম। স্টেপ বাই স্টেপ সেটা বোঝানো হয়েছে। যেহেতু গল্পটা স্পষ্ট নয়, অথবা কানে শোনা নয়, শুধুমাত্র অনুমান আর ছবির ভিত্তিতে, তাই ভুল হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই।
জলে মাছ ধরতে গিয়ে একটি জেলে একটি কাঠ মত কিছু পান, যেটা তার জালে আটকে গিয়েছিল। বাড়ি ফিরে সেটা কুঠার দিয়ে কাটতে উদ্যত হন, কিন্তু তার ফলে চোখ অন্ধ হয়ে যায়। এদিকে গ্রামের মুখ্যর কাছে স্বপ্নাদেশ আসে, এই কাঠ কে অধিষ্ঠিত করার জন্য, মা মেরির নামে। তারপরই এই চার্চ তৈরি।
আবারও বলছি, গল্পে ভুল রয়েছে।
কিছুটা এগিয়ে যেতেই দেখতে পেলাম, পুলিকট লেক। দূর থেকে দেখেছি, কিন্তু চোখে পড়ল ওর আসে পাশে জায়গাটা বেশ নোংরা। এগোতে ইছে হোল না আর।
সিমেট্রি দেখার সময় হিন্দিভাষী সেই দাদা আমাকে বলেছিলেন, দাদা পুলিকট লেকে বোট চড়ানো হয়। এখুনি আপনাদের দেখে কেও নিশ্চয় আসবে, বোট চড়ার ব্যাপারে। আপনি না বলে দেবেন। কিছুদিন আগে বোট উলটে জলে দুজন পরে যায়, মারা গেছে ওরা। আপনি ফিমেল নিয়ে এসেছেন, একদম রিস্ক নেবেন না।
এমন ভালোমানুষি দেখে মনটা অন্যরকম ভালোলাগায় ভরে গিয়েছিল।
শেষ পাতে এবার চাটনি দরকার।
সেই স্বাদ পূরণ করল পাযহাভেরকাদু বিচ।
৮০০ মিটার এগিয়েই পেয়ে গেলাম।
সমুদ্রের স্রোত মারাত্মক। নিচু হয়ে আছে ল্যান্ড, অর্থাৎ টান রয়েছে সাঙ্ঘাতিক।
প্রতিবার কোথাও সমুদ্র দেখলে এটা লক্ষ্য করি আমি।
পুরী অথবা দিঘা, সমুদ্রের দিকে তাকালে ল্যান্ড ডাইরেক্সন ওপরে থাকে, অর্থাৎ স্নানের উপযোগী। ঢেউ থেকে পাড়ে পৌঁছে দেবে। কিন্তু এটা সম্পূর্ণ উলটো।
ঢেউ খুব সামনেই তৈরি হয়েই ভেঙ্গে যাচে। পাড়ে ঠেলার থেকে টানছে বেশি।
একটু খানি জলে নামাও ক্ষতিকর হতে পারে। তাই পাড়ে এমন জায়গায় দাড়িয়ে, জল যেখানে পা ছোঁয় প্রতিবার।
সত্যি কথা বলতে, সমুদ্র দেখে যে কারোর মন উদাস হয়েই যায়। অন্ধপ্রদেশ এ এসে, পাহাড় দেখলাম, পর্বত দেখলাম। সমুদ্রটাও দেখা হয়ে গেল একটা ত্রিপের মাধম্যে।
ব্যাক্তিগত কিছু অভিজ্ঞতা, কোথায় ছিলাম, প্ল্যানিং, ড্রাইভার সংক্রান্ত কিছু কথা ইত্যাদি সমস্তটাই কভার করতে চেষ্টা করবো অন্য পোস্টে।
আজকের দর্শনীয় স্থান -
- পুলিকট লেক
- শ্রীহরিকোটা
- ডাচ সিমেট্রি
- চার্চ
- পাযহাভেরকাদু বিচ
©SamiranSamanta
Comments
Post a Comment