Boomika ( ২০২১ ) - মুভি রিভিউ

 প্লট ভয়, রহস্য

ভাষা – তামিল

আই এম ডি বি  রেটিং – ৫.৮ / ১০
পার্সোনাল রেটিং –  ৭ / ১০





একটা বড় দীর্ঘশ্বাস ফেলে রিভিউ লেখা শুরু করছি। ভুতের বই দেখব, ভয় পাব, শ্বাস প্রশ্বাসের গতি ত্বরান্বিত করে স্পন্দন উথাল পাথাল ঘটাবে, এটাই স্বাভাবিক। তবে এক্ষেত্রে একটু ব্যাতিক্রমি উদাহরণের নাম, “ ভুমিকা “। তামিল ভাষায় বানানটা অমন হলেও, পড়তে গেলে এমন ভাবেই উল্লেখ করতে হবে।
ব্যাতিক্রমি এই কারনে বললাম, সিনেমার শেষ পর্যন্ত দেখলে একধরনের আনন্দ অনুভব হবে, যেটা বাস্তবে সম্ভব আদেও হবে কি না, সেটা ভাবতে ভাবতেই বুকের ভেতর তৈরি হউয়া কষ্ট থেকেই নিজের অজান্তে একটা দীর্ঘশ্বাস বেড়িয়ে আসবে।

ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে অনেক কথা বলে সময় নষ্ট করবো না। কাহিনির শুরুটা একটু শুরু করে দিই, নাকি ?

ছোট্ট একটি হিল ষ্টেশন এরিয়া।
পরিত্যাক্ত একটি বাড়ি রয়েছে। বেশ কিছু বছর আগে পর্যন্ত ওখানেই শিশুদের চিৎকার হই হুল্লোড় শোনা যেত। আসলে একটি স্কুল হিসেবে পরিচিত ছিল এই বড় বাড়ি , ও তার চারপাশের খালি অংশ গুলো।
খালি জমি ফেলে রেখে লাভ নেই। রেসিডেনসিয়াল কমপ্লেক্স বানালে কেমন হয় ? চোখ পড়ে স্থানীয় এক পলিটিসিয়ানের।
সেই কন্ট্রাক্ট নিয়ে কাহিনীতে ঢুকে পড়ে কিছু ক্যারেক্টার।

আসল কাহিনি শুরু এবার।
ঘরের যাওয়া মাত্র তেমন কোন সমস্যা ওদের পোহাতে হয়নি, অন্যান্য ছকে বাঁধা মুভির মত।
ইতিমধ্যে তাদের মধ্যে একজন মেয়ে তার পরিচিত একটি বন্ধুর সাথে চ্যাটিং শুরু করেছে, সন্ধে বেলা আর কি কাজ করবে, টাইমপাশ আর কি।

কিন্তু
কিন্তু
কিন্তু...
কিছুখনের মধ্যেই জানতে পারে, ও যার সাথে কথা বলছে সে মারা গেছে প্রায় চব্বিশ ঘণ্টা হয়ে গেছে। তাহলে কথা বলছে কার সাথে ?
অবাক করার বিষয় হল, তারা যে পরিত্যাক্ত জায়গায় আছে, সেখানে আছে শুধু প্রকৃতি। কোন রকম টাওয়ার নেই। বিনা সিগন্যাল এ চ্যাট সম্ভব ?
হুম তখনই সম্ভব যখন সেটা কোন ভাবে অশরীরীর ছোঁয়া পায়
হুম, ভুমিকা।
কিন্তু কে এই ভুমিকা ? স্কুলের ছাত্রী তো সে নয় পরে বোঝা যায়। কিন্তু কি উদ্যেস্য তার ?
স্কুলটা পরিত্যাক্ত কেন ?
ভুমিকা যদি আজ অশরীরী, তাহলে সে মারা গেছে। কিন্তু কীভাবে ? তার মৃত্যু রহস্য কি আসলেই এই গল্পের মোড় ?
ঘরের চাকর তো এত দিন রয়েছে। সে তো কিছু টের পায়নি। তাহলে কি এমন হঠাৎ ঘটলো, বা ঘটতে চলেছে যার জন্য ভুমিকা জেগে উঠেছে ?
 গল্পের শুরুতে একটা গাড়ির এক্সিডেন্ট ঘটবে, যেখানে স্পট ডেড হয়ে যাবে একটি লোক।
কাহিনির সাথে এর কীভাবে সম্পর্ক আছে ?

চমৎকার একটা বাস্তব ভাবনার ওপর ভিত্তি করে তৈরি করা গল্প, সাধারন যে কোন গল্পের থেকে অন্যরকম। নতুন ফিল্ম দেখতে শুরু করলে আমার মত দর্শকরা ভাবে, আজ নতুনত্ব কি দেখবো, কি দেখে ভয় পাব।
এক্ষেত্রে আমি ভয় পায়নি, তবে যা দেখলাম, হৃদয় ছুয়ে গেছে। ভয় ব্যাপারটা তো সাময়িক, কিন্তু যে বাস্তবের সামনে এই সিনেমা দাড় করিয়ে দেবে প্রতিটা দর্শক কে, ভয় লাগছে সেগুলো তারা সহ্য করতে পারবে তো ?

ভুমিকার চরিত্রে, অবন্তিকা । কিছু বলার নেই, পুরো মাঠে ছয় হাকিয়েছে। অত্যন্ত সাবলিল,অতি মাত্রায় নমনীয়। এই মেয়েটি যেন এই চরিত্রের জন্যই তৈরি হয়েছে, এই ভাবনা যখনই মাথায় আসবে, জানবে সে জিতে গেছে। পরবর্তী সময়ে অন স্ক্রিন আরও দেখার ইছে রইল ব্যাক্তিগত ভাবে।

বাড়তি পাওয়া হিসেবে উপভোগ্য হল, প্রাকৃতিক দৃশ্য। সমগ্র স্ক্রিন কখনও ভরে যাবে সবুজে, কখনও বা কুয়াশায়, আবার কখনও রাতের আলোছায়ায় যেটাই হোক, সমস্তটাই প্রচণ্ড ভাবে উপভোগ্য। শব্দ পরিকল্পনা যখন তখন দর্শককে ডুবিয়ে দিতে পারে গল্পের ভেতরে।
একটা সন্তুষ্টি হয়নি, সেটা সিনেমার পোস্টার ছবি। যদিও সেটা এমন কিছু ব্যাপার নয়। কিন্তু মেইন জায়গা থেকে একটু যেন সরে এসেছে, হতে পারে স্পয়লার এড়াতে।

“ দুধ খাওয়া সন্তান যখন তার মা কেই তেড়ে আসে, তখন মা ও তাকে তেড়ে আসে, শাস্তি দেবে বলে “  সিনেমার শেষ কথাগুলো বর্ণে বর্ণে সত্যি।   
  


ভাল থাকবে সব্বাই।

   



 

Comments