Fear Street Trilogy ( 2021 )
প্রেক্ষাপট – ভয়, নৃশংস, রহস্য
সাবটাইটেল – ইংরেজি
অনেক দিন পর যেন ছোটবেলাকে ফিরে পেয়েছিলাম। যখন সেই
ভূত পেত্নী দৈত্য দানব বাস করত আমাদের গল্পের বইয়ের ফাঁক ফোকরে। অদ্ভুত এক রোমাঞ্চ
তৈরি হতো, সমস্তটাই বিশ্বাসের থেকেও বেশী কিছু ছিল। গল্পগুলো পড়ার পর একা বাথরুম এ
যেতে বড্ড ভয় লাগতো। আজকে একটা নয়, তিন তিনটে সিনেমার কথা বলবো,যারা একত্রে দারুণ
একটা কন্টেন্ট তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে।
এতোটুকু পড়ে অনেকের যদি মনে হয়, এটা তো ছোটবেলায় দেখা উচিত ছিল, এখন কেন বার করলো
এমন মুভি। উহু, কন্টেন্ট কিন্তু প্রাপ্তবয়স্কদের জন্যই বানানো রয়েছে, রয়েছে
নৃশংসতা, রয়েছে যৌনতা, রয়েছে না বলার ভাষায় ভয়াবহতা।
১৯৮৯ সালের টিনেজ হরর ফিকশন সিরিজ হিসেবে আমেরিকায় প্রথম
মুক্তি পায় ফিয়ার স্ট্রিট। ব্যাস, ওটাই শুরু, আর আজ গোটা একটা মুভি।
গল্প, ভয়, কৌতূহল, রহস্য, কাঁপুনি সমস্তটাই সঠিক পরিমাণে পড়েছে এই স্ট্রিটে।
অল্প অল্প করে তিনটে গল্প শুধু তুলে ধরছি।
Fear Street 1994 ( প্রথম
পর্ব )
শুরুতেই খুন হয়ে গেল একটি মেয়ে। একটি
পাবলিক মলে বই এর দোকানে কাজ করতো। যে খুন করলো, তার মুখে কঙ্কালের মাস্ক। পুলিশের
হেফাজতে খুনি গেল, কিন্তু পুলিশের রিভলভারের গুলি তার মাথায় ঢোকার পর।
জানা গেল, খুনি আসলেই খুনি নয়, সে আর পাঁচটা সাধারণ মানুষের মতই ঠাণ্ডা মস্তিষ্কের।
তাহলে ? কেন খুন করলো সে ?
শহরে খুন একটার পর একটা হতে শুরু করেছিল এক সময়ে। গতে বাঁধা কোনও সিরিয়াল কিলিং নয়।
পুলিশ ধন্দে পড়ে যায়, কারন এই খুন গুলোতে কোনও প্যাটার্ন নেই।
ভাবনা চিন্তা যখন হাতের বাইরে, দোষ পড়ে ডাইনির ওপর। কে এই ডাইনি ?
কাহিনীর মধ্যে কিছু টিনেজ জড়িয়ে পড়ে ঘটনা চক্রে। গ্রুপের কিছু জন মারাও যায়। কিন্তু বাকিরা ? কীভাবে ওরা নিষ্কৃতি পাবে ?
ডাইনি কে একবার যে দেখে সে আর বাঁচতে পারে না। তাহলে কি করে ওরা ফেরাবে নিজেদের মৃত্যু ভাগ্য ?
Fear Street 1978 ( দ্বিতীয়
পর্ব )
ডাইনি কে দেখার পরও একটি মহিলা কিন্তু বেঁচে ছিল,
আজও তার অস্তিত্য আছে। কিন্তু কি ভাবে সে এটা পারলো ? তার জন্য ফিরে যেতে হবে
আমাদের কয়েক বছর আগে, যখন ঘটনাটা তার সাথে ঘটে।
ডাইনির অস্তিত্ব সেদিনও ছিল। কিন্তু কিছু মানুষ এটা বিশ্বাস করতে পারেনি।
স্কুলের একটা ত্রিপ হয় জঙ্গলে।
ম্যাপ বলছে, এটাই সেই জঙ্গল যেখানে সেই ডাইনি ছিল বা হয়তো আছে। কৌতূহল বশত কিছু টিনেজ
ছেলে মেয়ে বেড়িয়ে পড়ে তার খোঁজে, সঙ্গে সেই মেয়েটিও। আর ভুল করে জাগিয়ে ফেলে
ডাইনির রক্ত তৃষ্ণা।
শুরু হয়ে যায় নারকীয় রক্তের খেলা। ছোট্ট মেয়ে ছেলে অনেকেই সেই অভিশাপের শিকার হয়।
এবার ?
কি করে বাঁচবে বাকিরা ?
একটা ফন্দি বের করে।
ডাইনিটার দেহ নাকি এক স্থানে মাটির নিচে, আর ওর কাটা হাত আর এক স্থানে।
দেহটা ঐ গাছের নিচে যদি রাখা হয়, কাটা হাতটা কোথায় ?
শুধু ঐ হাতের জন্যই কি এই অভিশাপ ?
খুব সুন্দর ভাবে এই চ্যাপ্টার একটা দারুণ মোচড়ের দ্বারা শেষ করা হয়।
Fear Street 1666 ( তৃতীয় ও অন্তিম পর্ব )
কে এই ডাইনি ? আসলে সে কি করেছে ? কি করে শক্তি লাভ
করলো ? কি এমন হয়েছিল ঐ জঙ্গলে ?
নিজের হাতটা কি করে নিজে কাটল ?
সেটাই যদি হয় তাহলে হাত ছাড়া ওকে মাটির তলায় রাখা হয়েছে কেন ?
অভিশাপ কি এভাবেই অনন্তকাল পর্যন্ত চলবে ?
খুব সুন্দর ব্যাখ্যা আর গল্পের দ্বারা সেটা দেখানো হয়েছে। সে কি সত্যি ডাইনি নাকি
তাকে ডাইনি বানানো হোল ? আসল কালপ্রিট অন্য কেও নয়তো ?
আজকের অভিশপ্ত জঙ্গলটা সেদিন একটা গ্রামের পাশে
ছিল। খুব ভাল কাটছিল ওদের সব্বার জীবন, শান্তি ছিল সেখানে। কিন্তু হঠাৎ কি এমন হোল
যে সবার মাঝে একটা ডাইনি জন্ম নিল ?
ইতিহাস আর বর্তমানের মেলবন্ধনে তৈরি হয়েছে এই পার্টটি, খুব সুন্দর গল্পের মাধ্যমে।
প্রতিটা গল্পের কালারটোন মারাত্মক। যেখানে যেটা
দরকার, সেখানে সেটাই ভরপুর। যেখানে কালার নিয়ে এতটা সূক্ষ্মতা, সেখানে শব্দ
পরিকল্পনা তো ভাল হবেই, স্বাভাবিক।
আর একটা ভাল ব্যাপার হোল, গল্প তিনটি কিন্তু বেশ বড়। অথচ কোথাও গিয়ে খেই হারিয়ে
ফেলেনি, কোথাও মনে হয়নি অতিরিক্ত কিছু। বরং গল্প যত এগিয়েছে, শক্তিশালী হয়েছে।
সব্বার মধ্যে আমার যদিও দ্বিতীয় পার্টই বেশী ভাল লেগেছে, তবে তিনটে পার্টই এক
অপরকে টেক্কা দেওয়ার যোগ্যতা রাখে।
ওয়েব সিরিজ তো অনেক দেখলে, এবার দেখো ওয়েব সিনেমা, চমৎকার !
Comments
Post a Comment