Arishadvarga ( ২০১৯ )
প্রেক্ষাপট – থ্রিলার, ক্রাইম, রহস্য
আই এম ডি বি – ৬.৮ / ১০
পার্সোনাল রেটিং – ৭.০ / ১০
ল্যাঙ্গুয়েজ – কান্নাডা
ক্রাইম থ্রিলার সিনেমা বানাতে গেলে একটা কথা মাথায় রাখতে হয়, খুনি তো সবসময়
দর্শকের সামনেই রয়েছে। কিন্তু শেষ হওয়া না পর্যন্ত তাকে চেনা মুশকিল। শুধু সেটাই
না, তাকে পুলিশ যেমন খুঁজছে, তেমন দর্শকরাও হাঁ করে বসে আছে, কোথায় সে, কেন খুন
করলো...
আর এখন বছর খানেক ধরে নতুন ধারা এসেছে, কীভাবে খুনি খোঁজার ব্যাপারে গল্পের ভেতর
গল্প, বা তারও ভেতর গল্প রাখা যায়। এমন ভাবে সাজানো হয় যে, একবার কাহিনী শুরু হোল,তো ঐ প্যাচেই পড়ে গেল দর্শক।
সঙ্গে শেষ মোচড় যদি থাকে তাহলে ?
হ্যাঁ, খুব সুন্দর এমন ঘরানার একটা ফিল্ম এর খোঁজ নিয়ে চলে এসেছি অনেক দিন পর।
কাহিনীতে আছে লোভ, আছে কাম, আছে লালসা, আর রক্ত। কে কীভাবে কখন এন্ট্রি নেবে, সেটা
সিনেমা দেখতে না বসলে বলা মুশকিল।
কাহিনি ছোট্ট করে বলি।
বিশেষ কারণে, টাকার লোভে আসে একটি ছেলে। আর একটি মেয়ে আসে অভিনয় এ চান্স পেতে চায় বলে। কোথায় আসে?
একজন ফিল্ম এডিটর এর বাড়ি। ছেলে আর মেয়েটি এসে দেখবে একজন খুন হয়ে গেছেন। দুজনের
মাথায় বজ্রাঘাত, এটা কি হোল ? কাহিনীতে আর একটা অটোচালক ঢুকে যাবে, আর সেও সেই
কেসে ফেসে যাবে। উল্লেখ্য, কোনও একজন এই তিনজনকে পর্যবেক্ষণে রাখবে, সি সি টিভির
দ্বারা, বারংবার ফোন করবে, নির্দেশ দেওয়ার জন্য।
এদিকে যে খুন হয়েছে তার স্ত্রী যখন জানতে পারে ব্যাপারটা, শারীরিক ভাবে অসুস্থ হয়ে
পড়ে। সে যদিও তার দ্বিতীয় স্ত্রী। প্রথম পক্ষের স্ত্রী অনেক আগেই সেপারেটেড হয়ে বিদেশে চলে গেছে। কিন্তু কেন
?
এক দিকেঐ তিন জন নিজেদের জবানবন্দী দেওয়া শুরু করেছে, পুলিশের সামনে।
আর এদিকে ঐ মহিলা নিজের কাহিনী শুরু করেছে, হসপিটাল এ বসে।
এবার দেখার বিষয় সবার কথা কোথায় গিয়ে মিলিত হয়।
সত্যি কথা বলতে কাহিনীর ৪৩ মিনিটের মাথায় মোটামুটি ভাবে আঁচ করা যায়, আসল গণ্ডগোল
কে করতে পারে। কিন্তু সেটা তো জাস্ট একটা ভাবনা, সত্যি নাও হতে পারে। তাছাড়া এত তাড়াতাড়ি
যদি জানা যায় আসল কালপ্রিট কে, তাহলে সিনেমার বাকি অংশ কি হবে ? উল্লেখ্য, যে কোনও
জায়গায় মনে হতে পারে যে আসল অপরাধী শনাক্ত হয়েছে, কিছুক্ষণ পর নিজের মত পাল্টে ফেলা
এমন কিছু আশ্চর্যের বিষয় নয়। সত্যি বলতে বাধ্য হলাম ( স্পইলার ) ,মাঝে মধ্যে আমার ঐ পুলিশ অফিসারটিকেও
সন্দেহ হছিল, ওনার ভাবনা চিন্তা চলার ধরন, বড্ড সন্দেহ প্রবণ।
পুলিশ অফিসারের কথা এলোই যখন, না বললেই নয়, অসাধারণ অভিনয়। বিশেষ কি পয়েন্ট হোল,
ওনার স্বাভাবিক লুক। দেখলেই মনে হয়, ঠাণ্ডা মাথায় খুন করতে পারেন। পুলিশ অফিসার
হয়েও ওনার উপস্থিতি যেন ঠিক সেফ না, যদিও সম্পূর্ণটাই অভিনয়ের দখলে।
যাহোক, আসল কাহিনী কোথায় এসে শেষ হয় হোল, কীভাবে হোল, আদেও কেও কি খুন করেছে কিনা,
সেটাই দেখার বিষয়।
গঠনগত ও গল্পের দিক থেকে যথেষ্ট ভাল ভাবে দেখানো হয়েছে। গল্পের মোচড় যদিও ততটা
জোরালো নয়, তবুও শেষ চেষ্টা করেছেন । ব্যাকগ্রাউন্ড সাউন্দ এর দিকে থেকে শিথিল
লাগলেও, গল্পের মোড়কে মোড়কে খুব সুন্দর লিরিক্স এর সাথে গান পরিবেশনা করা হয়েছে,
যেটা কিন্তু আমার বেশ লেগেছে, গানের মাধ্যমেই অনেক অনুভুতি ফুটিয়ে তুলতে সক্ষম
একেবারে।
প্লাস পয়েন্ট দর্শককে এক নাগারে বসিয়ে রাখার ক্ষমতা।
অভিনয় নিয়ে আমার কাওকেই কিছু বলার নেই। তবে গল্পে কিছু জায়গায় বেশ কনফিউশন তৈরি
করা হয়েছে। সেটা ইছে করে, নাকি অন্য কোনও মানে নির্দেশের জন্য, তা বলা শক্ত।
একটা ড্র ব্যাক, ব্যাক্তিগত ভাবে দিতে পারি।
এই ঘরানার গল্প, এর আগেও তৈরি হয়েছে। গল্পের মূল থিম বাদ দিয়ে বাকিটা, যেভাবে
দর্শককে বিভ্রান্ত করতে পারে, সেটা আমার মতে পুরনো পন্থা। সেদিকে জোর দিলে গল্পে
আরও কিছু কি এলিমেন্ত যোগ করতে পারলে, অসাধারণ আর একটা দারুণ পিস তৈরি হতে পারতো।
ও হ্যাঁ,
সিনেমার শেষ হওয়ার মুহূর্তটা কিন্তু মিস করলে চলবে না, দারুণ... বাকিটা সিনেমা
দেখে...
Comments
Post a Comment