দ্যা প্রিসট ( ২০২১ )
প্রেক্ষাপট - ভূত, ভয়, রহস্য
আই এম ডি বি – ৬.৪ / ১০
পার্সোনাল রেটিং – ৭.৪ / ১০
সাবটাইটেল - ইংরেজি / বাংলা
অরিজিনাল ল্যাঙ্গুয়েজ – মালায়ালাম
এই প্রথম ফিল্মের রিভিউ করার আগে বলতে বাধ্য হলাম, অসাধারণ বাকগ্রাউন্দ
মিউজিক। এতটা মনছোঁয়া ছন্দ, কখনও মনে আসবে আনন্দের জোয়ার, কখনও বা মন খারাপের রেস।
সাউথ ইন্ডাস্ট্রি যদিও এই বিজিএম এর জন্য বিশেষ ভাবে প্রসিধ্য, এটা কেও অস্বীকার
করতে পারবে না।
তার ওপর বেবি মনিকার অভিনয়, অসাধারণ শব্দের সমার্থক শব্দ বলা চলে।
একমিনিট একমিনিট, কে এই বেবি মনিকা ?
চিনতে পারলে না ?
কাইথি ফিল্মটা মনে পড়ে ? যেখানে একটা মেয়ে নিজের বাবার জন্য না খেয়ে না শুয়ে জেগে
থাকবে, জীবনে এই প্রথম দেখা হবে বলে ? মনে পড়ছে না না ?
আছা, রাতসসান ফিল্মটা মনে পড়ছে তো ? শেষে যে মেয়েটা কে বাঁচাতে গিয়ে সমস্ত কাণ্ডের
রহস্য ফাঁস হোল।
হ্যাঁ, এখানেও সেই ফেমাস মেয়েটি রয়েছে। ১২ বছর বয়সে কি জাদু না করে ফেলেছে, ওর
অভিনয় দেখে যে কেও মন্ত্রমুগ্ধের মত বসে থাকবে, এটুকু বলে দিলাম।
ফিল্মের আসল কি পয়েন্ট কিন্তু মামুটি স্যার। ওনাকে নিয়ে বলাটা হয়তো আমার ধর্তব্যে
নেই, কিন্তু এটুকু বলতে পারি, উনি ছাড়া কেও এই ক্যরেকটার করতে পারতেন না।
ফিল্মের কালার নির্বাচন জুতসই ভাবে আবহাওয়া তৈরি করে প্লট অনুযায়ী, যেটা খুব নরমাল
আর চমকপ্রদ। শব্দ পরিচালনা খুব সূক্ষ্ম না হলেও নিখুঁত করার পুরোপুরি চেষ্টা
করেছে। কালার গ্রেড আর শব্দ গ্রহণ হাতে হাত মিলিয়ে চললে তবেই একটা দারুণ ঝকঝকে
উপস্থাপনা তৈরি হয়, “ দ্যা প্রিসট “ তার ব্যাতিক্রম নয়।
ছোট্ট করে কাহিনী নিয়ে বলব ? আছা একটু ছিটেফোঁটা বৃষ্টি হোক না হয়।
শহরের এক নামজাদা পরিবার, অগাধ সম্পত্তির মালিক। দারুণ একটি ব্যাবসা চালান, তার
প্রতিপত্তি শীর্ষে। সমস্যা হোল, এই পরিবারের মেম্বাররা একের পর এক আত্মহত্যা করতে
থাকে, একই ভাবে। না আছে কোনও লক্ষণ , না আছে কোনও ভয় পাওয়া, তাহলে একই ভাবে পর পর তারা
মরছে কেন ? হুজুক উঠলে সেটাও থেমে যায়, কিন্তু এনাদের আত্মহত্যার রেস দেখলে...
কেসটা স্বাভাবিক লাগেনি, তাই চলে যায় প্রিসট অর্থাৎ মামুটি এর হাতে।
স্বাভাবিক ভাবে কেঁচো খুঁড়তে বেড়িয়ে পড়ল সাপ। এগুলো আসলেই কি আত্মহত্যা ? নাকি ...
?
কেস এর সমাধান হওয়ার মাঝেই আরও একটা নতুন খটকা এসে পড়ে প্রিসট এর হাতে।
সেটা হোল আমেয়া, অর্থাৎ বেবি মনিকা।
অনাথ এই মেয়েটি না কারোর সাথে কথা বলে, না খেলে। খুব অদ্ভুত এবং আর পাঁচটা সাধারণ
মেয়ের মতন নয়। প্রিসট এর চোখে এমন কি পড়ল যাতে আমেয়া কে স্বাভাবিক লাগলো না ?
এই প্রিসট কি শুধুই প্রিসট, নাকি আরও কিছু উনি করেন যে সাধারণ মানুষের বোঝার আর
মেনে নেওয়ার বাইরে ?
স্কুলে আসা নতুন ম্যাডাম কে আমেয়া কেন এতো পছন্দ করে ?
ঐ নামজাদা ফ্যামিলির শেষ মেম্বার যখন মারা যায়, আমেয়া তখন ওর ঘরে ছিল, অথচ খুন
করেনি, তাহলে ওকি খুনিকে সত্যি দেখেছে ?
প্রিসট নতুন ম্যাডাম কে কি সতর্কবার্তা দিতে চান ?
জানতে গেলে এই সিনেমা মাস্ট দেখতে হবে। আর হ্যাঁ, পদে পদে স্পইলেয়ার আছে, তাই বেশী
কিছু বলা ঠিক হবে না মনে করলাম।
যে সিনেমা শেষ হবার পর রেষ রেখে যায়,
সেটাই তো আসল সিনেমা। মনের মধ্যে যদি দাগ না কাটতে পারলো, সবার মাঝেও যদি মন না
কারতে পারলো, তবে কিসের সিনেমা ?
এই সিনেমা আনন্দ আর দুঃখের ব্যাল্যান্স করা সত্ত্বেও শেষের দিকে চোখ দিয়ে জল বার
করে দিলে কিন্তু আমাকে কেও কিছু বলতে পারবে না।
ভাল থাকবে সব্বাই।
Comments
Post a Comment