কোল ব্ল্যাক থিন আইস ( ২০১৪)
প্রেক্ষাপট - ক্রাইম, থ্রিলার , ডিটেকটিভ
আই এম ডি বি – ৬.৭ / ১০
পার্সোনাল রেটিং – ৭ / ১০
সাবটাইটেল - ইংরেজি
অরিজিনাল ল্যাঙ্গুয়েজ – মান্দারিন
ফ্রাইড রাইস আর ফুলকপির ঝোল। শুনতে কেমন একটা বেমানান লাগছে না ? হ্যাঁ, সিনেমার নামটা দেখে আমারও কিছুটা এমনই অনুভব হয়েছিল। সেজন্যই, চোখের সামনে থাকা সত্ত্বেও দেখার আগ্রহ জন্মায়নি। কিন্তু তারপর যেটা দেখলাম, রিভিউ আবশ্যক মনে হোল । ২০১৪ সালের এই ফিল্মটা যেরকম সারা জাগিয়েছিল, সেটার স্বাদ না নেওয়াটা কিন্তু যথেষ্ট বোকামি।
চাইনিজ ক্রাইম থ্রিলার এর ঘরানা একদম আলাদা রকমের, যেখানে সব কিছু জেনে বুঝেও দর্শক সীট ছেড়ে উঠতে পারবে না। ৬৪তম বার্লিন ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভালে তো গোল্ডেন বিয়ার এমনি এমনি ঘরে আসেনি।বেস্ট অভিনেতা হিসেবেও পুরস্কার প্রাপ্ত এই ফিল্মেই।
প্রথমেই বলে নিচ্ছি, কাহিনী যেটাই হোক, ব্যাপারটা বেশ রসঘন ভাবে দেখতে হবে। 106 মিনিটের এই সিনেমা যথেষ্টই আস্তে আস্তে নিজের জাল বিস্তার করতে পুরোপুরি সক্ষম হয়েছে। একটা সময় মনে হতে পারে, কি দেখতে গিয়ে কোথায় চলে এলাম ? কেনই বা এলাম ?
কাহিনীর একটু বর্ণনা দেওয়া যাক।
চীনের বিভিন্ন শহরে কয়লার খাদানে পাওয়া যেতে শুরু করলো মানুষের দেহাবশেষ। কোথাও আছে শুধু হাত, কোথাও বা শুধু পা। এগুলো কার ? আর কি কারণে এসব কাণ্ড ?
ডিটেকটিভ কাজে লেগে তো পড়ে , কিন্তু সদ্য ডিভোর্স হওয়ার ফলে নিজে মানসিক ভাবে একটু নড়ে গেছে।
ওদিকে বডি গুলোর ক্ষেত্রে দুটো ব্যাপার মিল আছে।
একটা হলো ওদের পায়ে বরফের স্কেটিং এর জুতো রয়েছে, আর দুজনেই আগের রাত্রে একই মহিলা কে ডেট করেছে।
কে এই মহিলা ?
একটি লন্ড্রি তে কাজ করেন, যেখানে ডিটেকটিভ চলে যায় খুব তাড়াতাড়ি। আর প্রথম দেখাতেই মনে ধরে বসে ঐ মহিলাকে। তারপর ?
আসল সন্দেহের আলো পড়বে ওই মহিলার স্বামীর ওপর, যে এখন নিজের পরিচয় গোপন করে রেখেছে সেই ১৯৯৯ সাল থেকে। এই সাল থেকেই প্রথম খুনের আভাষ পাওয়া যায়।
কি হচ্ছে ব্যাপারটা ? গুলিয়ে গেল না ? প্রথম খুন আবার কোথা থেকে এলো এমনটাই মনে হচ্ছে ?
ব্যাস আমি এখানেই ইতি টানবো গল্পের। শুধু এটুকু বলবো, একটু স্লো মুভি হলেও, মুভি দেখার পর একটা সাইড এফেক্ট হবেই, ঠিক যেমন টা নলেনগুড়ের সন্দেশ খাওয়া শেষ হয়ে যাওয়ার পর যে প্রাপ্তি মুখের ভেতরে লেগে থাকে।
সিনেমাটিতে প্রথম থেকেই কালারের ওপর বিশেষ খেয়াল রেখেছে। প্রতিটা ক্ষেত্রে ঝকঝকে উপস্থাপনা, কাহিনির মধ্যে বুদ্ হতে বাধ্য করে। বিশেষত ভিন্তেজ্ রঙের খাম খেয়ালি আসা যাওয়া, অন্য ফ্লেভার উপস্থাপন করে। এক কথায় খুব পাওয়ারফুল একটা ডিটেকটিভ থ্রিলার এমন মানের খুব কমই দেখেছি আমি।
অভিনয় নিয়ে জাস্ট কিছু বলার নেই। এতটা স্বাভাবিক ,সত্যি মনে হয়েছিল একবার , এটা সিনেমাই তো ?
সিনেমার নামকরণটা বড্ড অদ্ভুত। ওটা ব্যাখ্যা করতে আমি পারতাম, কিন্তু ওটাই বেশ বড় একটা স্পইলার।
আপাতত নির্বাক থেকে রহস্যের মধ্যে ডুবে যেতে সবাইকে আহ্বান জানাচ্ছি।
ও হ্যা, ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল এ কিছু দৃশ্য কেটে নেওয়া হয়েছিল, উদ্ঘট কিছু সেক্স এর দৃশ্যের জন্য। তাই সেটা যদি নাও দেখতে পাও ক্ষতি নেই, কারণ মূল সিনেমা সেখান থেকে একটু দূরে।
ভাল থাকবে সব্বাই।
Comments
Post a Comment